Baiji Sangeet

বাইজি সংস্কৃতি নিয়ে অন্য স্বাদের সঙ্গীতানুষ্ঠান, শীতের শহরে হয়ে গেল ‘বাইজি সঙ্গীত’

‘বাইজি সঙ্গীত’-এর মঞ্চে সঙ্গে নাচ, গান ও ভাষ্যপাঠের মধ্যে দিয়ে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘বাবু কালচার’।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৫৮
Share:

‘বাইজি সঙ্গীত’।

অ্যাকাডেমি থিয়েটার ও ঋদ্ধি বন্দোপাধ্যায়ের মিউজিক অ্যাকাডেমির উদ্যোগে জ্ঞান মঞ্চে আয়োজিত হল এক অন্য ধরনের সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘বাইজি সঙ্গীত’। মূলত পুরনো কলকাতার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনতেই এই ধরনের অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা। ‘বাইজি সঙ্গীত’-এর মঞ্চে সঙ্গে নাচ, গান ও ভাষ্যপাঠের মধ্যে দিয়ে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘বাবু কালচার’।

Advertisement

অনুষ্ঠানের মূল ভাবনা ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ঋদ্ধি বন্দোপাধ্যায় ও দেবজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঠে ছিলেন অভিনেতা দেবদূত ঘোষ, নৃত্য পরিবেশনায় অভিনেত্রী দেবযানী চট্টোপাধ্যায় এবং নৃত্য পরিচালনার দায়িত্বে অভিরূপ সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ঋদ্ধি বন্দোপাধ্যায়ের মিউজিক অ্যাকাডেমির অনেক শিক্ষার্থীও।

অনুষ্ঠানের সূচনা পর্বে বহু গুণীজনকে সম্মাননা প্রদান করা হয় ঋদ্ধি বন্দোপাধ্যায়ের মিউজিক অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে। তালিকায় ছিলেন চিকিৎসক অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, সঞ্চিতা ভট্টাচার্য, সুমনা কাঞ্জিলাল, সোমা দাস, স্বাতী ভট্টাচার্য, পায়েল সেনগুপ্ত এবং চিকিৎসক পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ঋদ্ধি বন্দোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “পুরনো কলকাতার বাইজিদের গানজীবন, ব্যক্তিজীবন নিয়ে আলোচনাই এই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ। তথাকথিত সমাজ এঁদের কলঙ্কিত করলেও আদতে এঁরা হলেন গান্ধর্বী। এই বাইজিরা তাঁদের গুণে সঙ্গীত জগতে এমন কিছু অবদান রেখে গিয়েছেন, যা আমরা সাধারণ মানুষেরা পারব না। দক্ষিণে বাইজি নৃত্যকে এখন অনেকটাই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তাই এই অনুষ্ঠান সেই সকল বাইজিদের প্রতি আমাদের মাতৃতর্পণ।’’

অনুষ্ঠানের আর এক উদ্যোক্তা দেবজিত বন্দোপাধ্যায়ের কথায়, “এ বছর অ্যাকাডেমি থিয়েটারের চল্লিশ বছরে আমাদের নিবেদন বাইজি সঙ্গীত। নাচে-গানে পারদর্শী হওয়া সত্ত্বেও এই বাইজিদের আমরা কোনও দিন সম্মান দিতে পারিনি। চিরকাল তাঁদের অবহেলার চোখেই দেখা হয়েছে। তাঁদের প্রতি সম্মান জানাতেই আমাদের এই নিবেদন। বাইজিদের হাত ধরে জীবনের প্রচুর অধ্যায় উঠে এসেছে। রবীন্দ্রনাথ থেকে বিবেকানন্দ-সহ বহু মনীষী এতে আপ্লুতও হয়েছেন। বিভিন্ন নাটকেও এই বাইজি সঙ্গীত ব্যবহার করা হত।’’

অভিনেত্রী দেবযানী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাইজি সঙ্গীত ঘিরে এই ভাবনাটাই একেবারে অভিনব। এই ধরনের অনুষ্ঠান আগে হয়নি বললেও চলে। এই বাইজি সঙ্গীতের পিছনে যে ইতিহাস, তাকেই এই সুন্দর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এতে শামিল থাকতে পেরে খুবই ভাল লাগছে।’’

নৃত্য পরিচালক অভিরূপ সেনগুপ্তের কথায়, “বাইজি সঙ্গীত ঘিরে এই ধরনের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের নৃত্য পরিচালনার দায়িত্ত্ব ভার ছিল আমার উপরে। দেবযানীদির নাচের মধ্যেও একটু অভিনবত্ব রেখেছিলাম। বাংলা সংস্কৃতির নৃত্যশৈলীর সঙ্গে কত্থকের মিশেল রেখে কোরিয়োগ্রাফি করেছি। অনেকেরই ধারণা, বাইজি নৃত্যশৈলী অন্যান্য নৃত্যশৈলীর থেকে আলাদা। বিষয়টা আসলে তা নয়। প্রত্যেকটি নৃত্যশৈলীর আলাদা আলাদা ঘরানা থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই।’’

অনুষ্ঠানের ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার আনন্দবাজার অনলাইন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন