Anubrata Mondal

শিবঠাকুরের মামলায় কঠিন নয় খুনের চেষ্টার প্রমাণ, অনুব্রত-তদন্তে দাবি পুলিশের

দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শিবঠাকুরের অভিযোগ, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলীয় কার্যালয়ে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে ‘গলা টিপে প্রাণে মারা’র চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:০৪
Share:

তৃণমূল বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

দলেরই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডলের খুনের চেষ্টার অভিযোগে আপাতত সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন তৃণমূল বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বিরোধীদের দাবি, অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে ইডি-র জেরা আটকাতে ‘সাজানো’ মামলায় তাঁকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। শিবঠাকুরের অভিযোগে কিছু ‘অসঙ্গতি’, ধারা প্রয়োগ থেকে মামলার তদন্তের গতিপ্রকৃতি-সহ নানা প্রশ্ন উঠেছে। জেলা পুলিশের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, সেদিন কী ঘটে, সেটা তদন্ত সাপেক্ষ হলেও, কিছু একটা ঘটেছিল প্রমাণ করা কঠিন নয়।

Advertisement

দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শিবঠাকুরের অভিযোগ, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুবরাজপুরের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে ‘গলা টিপে প্রাণে মারা’র চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত। তবে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে শিবঠাকুর ঘটনার যে সময়কাল উল্লেখ করেছেন, তা গত বছর মে মাসের প্রথম দিকে। প্রশ্ন উঠেছে , বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে এপ্রিলের শেষ ভাগে। মে মাসের প্রথম দিকে ঘটনা ঘটলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন হবে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, এতদিন পরে কেন অভিযোগ। তা-ও আবার এমন দিনে, যে দিন দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে ইডি-কে গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করার অনুমতি দিয়েছিল। তৃতীয় প্রশ্ন ছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৫ নম্বর ধারা (যা মারাত্মক আঘাতের জন্য ব্যবহার করা হয়) প্রয়োগকে ঘিরে। যে ধারা প্রয়োগে মেডিক্যাল পরীক্ষা আবশ্যিক। কিন্তু, অভিযোগকারীর আঘাতজনিত বা ইনজুরি রিপোর্টই নেই।

যদিও অভিযোগকারীর সুরেই পুলিশের এক সূত্রের দাবি, শিবঠাকুর ‘তাড়াহুড়ো’য় মে মাস উল্লেখ করলেও ঘটনাটি বিধানসভার আগেই ঘটেছে। কারণ, তৃণমূল জেলা সভাপতি রোজ দুবরাজপুরের দলীয় কার্যালয়ে আসেন না। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কয়েকবার এসেছেন। সেই বৈঠকে কারা উপস্থিত ছিলেন, বৈঠকের ‘রেজ়োলিউশন’ সংগ্রহ করা দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা হবে। নজরদারি ক্যামেরা বর্তমানে অকেজো। সচল থাকলেও সর্বোচ্চ ছয় মাস আগের ফুটেজ থাকতে পারে। ফলে, এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের প্রাসঙ্গিকতা থাকছেন না, দাবি জেলা পুলিশের। নির্বাচনের আগে কার্যালেয় অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের উপস্থিতিও প্রমাণ করা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ। তবে, বন্ধ দরজার পিছনে ঠিক কী ঘটে, তা তদন্ত সপেক্ষ।

Advertisement

শিবঠাকুর বড়দিনে লাখ টাকার মোটরবাইক কিনে ফেললেন। তাঁকে দল শো-কজ় করেছে, তা বোঝার উপায় নেই। যে শো-রুম থেকে তিনি বাইকটি কিনেছেন, তারা সমাজমাধ্যমে বাইক-সহ শিবঠাকুরের ছবি পোস্ট করেছে। ফের বিরোধীরা বলতে শুরু করেছেন, সবটাই যে সাজানো, তা স্পষ্ট। শিবঠাকুর যদিও বলেন, ‘‘কে কী বলছেন জানি না। আমার পুরনো বাইক আর চালানো যাচ্ছিল না। তাই নতুন বাইকটা ফিনান্সে কিনেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন