অরূপ রায়।ফাইল চিত্র।
হাওড়ার বাকসাড়ায় প্রতিবাদী যুবককে মারধরের বিষয়টি দল যে মেনে নিচ্ছে না, তা জানিয়ে দিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি ও সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর বাড়িতে দরবার করেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের জোরজুলুম কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। হার্মাদরা গুন্ডা-বদমায়েশি করবে, বেয়াদবি করবে, কেউ টালির চালের ঘর করতে চাইলেও টাকা চাইবে— দল বা সরকার-প্রশাসন কোনও ভাবেই তা মেনে নেবে না।’’
গত রবিবার রাতে বাকসাড়ার বাঁধ এলাকায় একটি বাড়িতে অসামাজিক কাজকর্মের প্রতিবাদ করতে হাজির হন স্থানীয় বাসিন্দারা। মিটমাট করার অজুহাতে জড়ো হয়ে যায় তৃণমূল-সমর্থক বলে পরিচিত ২০-৩০ জন যুবক। তারা হঠাৎই বেতের চাবুক ও লাঠি নিয়ে প্রতিবাদী জনতাকে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। কয়েক জন বাসিন্দা আহত হন। স্থানীয় বটানিক্যাল গার্ডেন থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সেখানেই পাপ্পু হাজরা নামে এক যুবকের গোপনাঙ্গে সজোরে লাথি মারার অভিযোগ ওঠে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অরবিন্দ গুহের ব্যক্তিগত সচিব সোনু আচার্যের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত পাপ্পুকে প্রথমে দক্ষিণ হাওড়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে ভর্তি করানো হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। তিনি এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন। সোনু-সহ চার তৃণমূল-সমর্থক সুব্রত ঘোষ, রাকেশ শর্মা ও সোনম মাপারুর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পাপ্পুর দাদা দীপ হাজরা। বাসিন্দারাও গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে থানায় অভিযোগ করেন। সোনু অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন।
মঙ্গলবার পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ বলছে, অভিযুক্তেরা গা-ঢাকা দিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ ইচ্ছা করেই অভিযুক্তদের ধরছে না। এ দিন বাকসাড়ার ৬০০-৭০০ বাসিন্দা অরূপবাবুর বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে অবিলম্বে ধৃতদের গ্রেফতারের দাবি জানান। মন্ত্রী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তাঁরা ফিরে যান।
গোটা এলাকা এ দিনও ছিল থমথমে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শুধু অসামাজিক কাজকর্মে মদত দেওয়াই নয়। এলাকায় নতুন নির্মাণকাজ হলে, এমনকি কেউ বাড়ির পাঁচিল তুললে সোনুর নেতৃত্বে কিছু যুবক নিজেদের পুরকর্মী পরিচয় দিয়ে সেখানে পৌঁছে যায়। জরিমানার ভয় দেখিয়ে জোর করে টাকা আদায় করে।
এলাকার বাসিন্দা মালা মাজি, প্রিয়াঙ্কা সাউদের অভিযোগ, ‘‘সোনম, সুব্রত, রাকেশের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। ওদের অনুমতি ছাড়া কোনও কাজ করা যায় না। কাজ করতে গেলে ওদের টাকা দিতে হয়।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও নির্মীয়মাণ বাড়ির মালিকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ায় সোনম ও সুব্রতকে হাতেনাতে ধরে মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল। তারা টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু নিজেদের হাওড়া পুরসভার কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে দলীয় নেতাদের একাংশের মদতে তারা ফের এই কাজ শুরু করেছে বলে বাসিন্দাদের অভিযো