Arbitration Meeting

বান্ধবীর বিয়ে রোখায় ৫০ হাজার জরিমানা কিশোরীর

রবিবার সালিশি সভায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্যের পরে আতান্তরে পড়েন ওই ছাত্রীর বাবা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশপুর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

সহপাঠিনীর বিয়ের কথা জেনেই নবম শ্রেণির মেয়েটির মনে হয়েছিল কিছু একটা করা দরকার। স্কুলের শিক্ষকদের গিয়ে বলেছিল সে। তাঁদের মাধ্যমে খবর পৌঁছেছিল পুলিশ-প্রশাসনে। গত বৃহস্পতিবার সেই কিশোরীর বিয়ে আটকানোও গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু তার পরেই ঘনিয়েছে বিপদ। বছর পনেরোর যে-মেয়েটির সক্রিয়তায় বেআইনি এই বিয়ে আটকানো গিয়েছে, সালিশি বসিয়ে সেই কিশোরীর পরিবাররেই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। কন্যাশ্রী থেকে উৎকর্ষ বাংলা— বাল্যবিবাহ আটকাতে একের পর এক প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার, অল্প বয়স থেকেই এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরির প্রয়াস চলছে, তৈরি হচ্ছে কন্যাশ্রী ক্লাব। তার পরেও কেন এমন ঘটনা, প্রশ্ন সেখানেই।

রবিবার সালিশি সভায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্যের পরে আতান্তরে পড়েন ওই ছাত্রীর বাবা। তিনি সামান্য চাষি। অত টাকা পাবেন কোথায়! সোমবার তিনি পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। তবে লিখিত অভিযোগ করেননি। মৌখিক নালিশ জানান। তাতেই অবশ্য পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয় হয়। অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তদের মঙ্গলবার কেশপুর ব্লক অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। পরে থানাতেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল। মধ্যস্থতায় সমস্যা মিটেছে। অভিযুক্তেরা জানিয়েছে, তাদের ভুল হয়ে গিয়েছে। কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ মানছেন, ‘‘এমন একটি খবর পেয়েছিলাম। আমাদের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’

Advertisement

নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে বছরভর নানা প্রচার চলে। তার জেরে সচেতনতাও বাড়ছে। জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাসের মতে, ‘‘সচেতনতা বাড়ছে বলেই তো ওই মেয়েটি তার সহপাঠিনীর বিয়ের খবরটা আগাম দিয়েছিল।’’ চাইল্ড লাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটর বিশ্বনাথ সামন্তেরও বক্তব্য, ‘‘সচেতনতা অনেক বেড়েছে বলেই বহু নাবালিকার বিয়ে রোখা সম্ভব হচ্ছে।’’ কিন্তু বিয়ে রুখে যদি কোপে পড়তে হয়, তা হলে তো কেউই আর বিয়ের কথা জানাবে না! জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনু ভুঁইয়ার আশ্বাস, ‘‘কেশপুরের মতো ঘটনা এড়াতে আরও বেশি প্রচার হবে।’’

নবম শ্রেণির যে-ছাত্রী বান্ধবীর বিয়ে রুখেছে, সালিশি-জরিমানার ভয়ে অবশ্য সে ভীত নয়। মেয়েটি বলছে, ‘‘নাবালিকা বিয়ে আটকাতে স্কুলে সচেতনতা শিবির হয়। সেই শিবিরেই বলা হয়েছিল, এলাকায় কোনও নাবালিকার বিয়ের খবর পেলে স্কুলে জানাতে। সেই মতোই জানিয়েছি। ভবিষ্যতেও জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন