জেলা পরিষদ দখলে, তবু স্বস্তি নেই তৃণমূলে

রাজ্যপাট দখল করলেও শাসন করা এখনও সুতোয় ঝুলে তৃণমূলের।মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহকারি সভাধিপতির আসন দু’টি সংখ্যার জোরে তৃণমূলের পক্ষে গেলেও স্থায়ী সমিতির দখলদারি যে এখনই পাচ্ছে না তারা, আড়ালে তা মেনে নিয়েছেন তৃণমূলের শীর্য নেতারা।

Advertisement

অনল আবেদিন

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২৩:২৯
Share:

জেলা পরিষদের রাজনৈতিক জটিলতায় থমকে উন্নয়ন। মরচে ধরেছে রোলারে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

রাজ্যপাট দখল করলেও শাসন করা এখনও সুতোয় ঝুলে তৃণমূলের।

Advertisement

মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহকারি সভাধিপতির আসন দু’টি সংখ্যার জোরে তৃণমূলের পক্ষে গেলেও স্থায়ী সমিতির দখলদারি যে এখনই পাচ্ছে না তারা, আড়ালে তা মেনে নিয়েছেন তৃণমূলের শীর্য নেতারা।

ফলে, জেলাপরিষদের বার্ষিক বাজেট তৃণমূলের সভাধিপতির পক্ষে পাশ করানো কার্যত অসম্ভবই রয়ে যাবে তাদের।

Advertisement

পঞ্চায়েত আইন অনুসারে বার্ষিক বাজেটে বরাদ্দ করার অর্থ— কোথায়, কোন কাজে, কখন খরচ করা হবে তার অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি। পূর্ত ও পরিবহণ, কৃষি ও সেচ, বিদ্যুৎ ও ক্ষুদ্রশিল্প, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ- সহ জেলাপরিষদের মোট ৯টি স্থায়ী সমিতির সিদ্ধান্ত অনুসারেই তা বরাদ্দ হয়। বর্তমানে তৃণমূল ও তার বিরেধীপক্ষ বাম-কংগ্রেস জোটের সংখ্যার বিন্যাসই বলছে, বার্ষিক সাধারণ বাজেট পাশ করানো থেকে স্থায়ী সমিতি গুলিতে উন্নয়নমূলক কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যন্ত, প্রায় সব কিছুই বিশ বাঁও জলে।

সভাধিপতি ও সহকারি সভাধিপতিকে নির্বাচিত, বা অপসারিত করতে পারে এক মাত্র জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যরা। মুর্শিদাবাদ জেলায় সেই সংখ্যাটি ৭০। জেলাপরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কমলেশ চট্টোপাধ্যায় ভরতপুরের বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ায় সংখ্যাটি এখন ৬৯। তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট থেকে চলে আসায় মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা এখন ৩৯। সভাধিপতি ও সহকারি সভাধিপতিকে অপসারণের জন্য অনাস্থা ভোটের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।’’

সেই দলবদলের সংখ্যা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সভাধিপতি শিলদিত্য হালদার ও জেলাপরিষদের বামফ্রন্টের পরিষদীয় দলনেতা ইনসাফ আলি বিশ্বাস। তাঁরা দু’ জনেই বলেন, ‘‘জেলাপরিষদের ৩৯ জন সদস্য তাঁদের দিকে বলে শুভেন্দুবাবু দাবি করলেও আসলে রয়েছে ৩১ জন। ফলে অনাস্থায় তাঁদের পরাজয় অনিবার্য।’’

গত ১৩ অগস্ট দলত্যাগ করা ছয় জনের সদস্যপদ খারিজের দাবি জানিয়ে জেলাশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছে কংগ্রেস। সেই আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই ছয় জনের অনাস্থায় অংশগ্রহণ করা মুস্কিল বলে জানা গিয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন অবশ্য ওই হিসাব মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস এখন বাজে কথা বলছে।’’ তাঁর দাবি, অনাস্থার সময় দেখা যাবে তাঁদের পক্ষে ৩৯ জনের বেশি সংখ্যক জনপ্রতিনিধি ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন।

মন্ত্রী হয়ে যাওয়ায় জাকির হোসেন ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারবেন না। ফলে, মুশির্দাবাদ জেলাপরিষদের সাধারণ সভার সদস্য সংখ্যা এখন ১২০। কিন্তু তাতে বাম-কংগ্রেস জোটের সংখ্যাধিক্য রয়ে গিয়েছে এখনও। কংগ্রেসের দাবি, সাধারণ সভায় এখনও তাঁদের ৭৬টি ভোট রয়েছে। ফলে সবাধিপতির পদ দখল করলেও রাজঅয়পাট শাসনের প্রশ্নে পদে পদে বাধা পাবে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন