উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র।
ফের অস্ত্র কারখানার হদিস মিলল মালদহের কালিয়াচকে। বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিহারের মুঙ্গেরের কারবারিদের দিয়ে চলছিল অস্ত্র তৈরির কাজ। মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ অভিযান চালিয়ে কালিয়াচক থানার নওদা যদুপুরের দেবীপুর গ্রামে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র-সহ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে বাড়ির মালিক লুৎফর শেখ এবং আরও ছ’জনকে। এদের বেশির ভাগই বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। মনে করা হচ্ছে, মুঙ্গেরের কারিগরদের সহায়তা নেওয়ার পাশাপাশি সেখানকার ব্যবসায়ীদের সাহায্যে তা বাজারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হতো।
নতুন করে কালিয়াচকে অস্ত্র কারখানার হদিস মেলায় উদ্বিগ্ন জেলা পুলিশের কর্তারা। এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ধৃতদের আদালতে পাঠিয়ে হেফাজতে নেওয়া হবে। কী কারণে তারা অস্ত্র তৈরি করছিল এবং অস্ত্র তৈরির সঙ্গে অন্য কোনও চক্র জড়িত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আজ, বুধবার ধৃতদের পেশ করা হবে মালদহ জেলা আদালতে।
আরও পড়ুন: প্লাবিত উত্তরে মৃত্যু আরও চার জনের
বছর দুয়েক আগে একাধিক বার কালিয়াচকের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ মিলেছিল অস্ত্র কারখানার। একই সঙ্গে গুলি, বোমা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠত কালিয়াচক। নওদা যদুপুরে দুই দুষ্কৃতী বকুল শেখ ও জাকির শেখ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বকুল, জাকির এবং এলাকার বেশ কিছু দুষ্কৃতী এখন জেলে। তার মধ্যে ফের অস্ত্র কারখানার হদিস মেলায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে, নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দেবীনগর গ্রামের লুৎফর শেখের বাড়িতে পরিত্যক্ত একটি ঘরে চলত অস্ত্র তৈরি। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪২টি সেভেন এমএম, ৬টি নাইন এমএম পিস্তল, শতাধিক ম্যাগাজিন। এ ছাড়াও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম অর্থাৎ লোহার রড কাটার মেশিন, ছেনি, শতাধিক পাইপও উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, মাস দুয়েক ধরে চলছে অস্ত্র কারখানা। পুলিশ জানায়, লুৎফর শেখ-সহ গ্রেফতার হয়েছে বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা মহম্মদ সাহিদ শেখ, মহম্মদ মুরতাজা, মহম্মদ আকবর শেখ, মহম্মদ কামিরুদ্দিন শেখ, মহম্মদ মেহবুব আলি ও কালিয়াচকের দেবীপুরের বাসিন্দা সামিম শেখ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, লুৎফর শ্রমিকের কাজ করেন। তবে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল। পাকা বাড়ি তার। তা নিয়ে গ্রামে আলোচনা হলেও সে অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত, তা ভাবতে পারেননি স্থানীয় বাসিন্দারা।