দশ দিন পুলিশি হাজতে এসডি অ্যালুমিনিয়াম-কর্তা

সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে সংস্থার কর্মীরা বেলঘরিয়া-সহ বিভিন্ন থানায় প্রভিডেন্ট ফান্ড ও অন্যান্য বকেয়া টাকা তছরুপের অভিযোগ আগেই দায়ের করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৪
Share:

পাকড়াও: ব্যারাকপুর আদালতে সুদীপ দত্ত। নিজস্ব চিত্র

কামারহাটির এসডি অ্যালুমিনিয়ামের ২৮২ জন কর্মীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও ঘোরালো হল অনিশ্চয়তা।

Advertisement

মঙ্গলবার প্রতারণার অভিযোগে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হলেন সংস্থার চেয়ারম্যান সুদীপ দত্ত। সব মিলিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ২০০টি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে সংস্থার কর্মীরা বেলঘরিয়া-সহ বিভিন্ন থানায় প্রভিডেন্ট ফান্ড ও অন্যান্য বকেয়া টাকা তছরুপের অভিযোগ আগেই দায়ের করেছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর নামে ‘লুক আউট’ নোটিস জারি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার মুম্বই থেকে সিঙ্গাপুরের উড়ান ধরার মুখে তাঁকে আটক করা হয়। পরে রাজ্য পুলিশের একটি দল গিয়ে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসে। বুধবার ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তাঁকে তোলা হয়। সুদীপ দত্তকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Advertisement

২০১৫ সাল থেকেই কর্মীদের বকেয়া টাকা না-মেটানোর অভিযোগ উঠেছে। সংস্থার শ্রমিক সংগঠনের তরফে বিমল সাহার অভিযোগ, ২০১৫-র সেপ্টেম্বর থেকে ২৮২ জন কর্মীর পিএফের টাকা জমা দেননি সংস্থা কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে বন্ধ বেতনও। এ ছাড়াও কর্মী সমবায়ের ঋণ বাবদ বেতন থেকে যে-টাকা কেটেছে সংস্থা, তা-ও জমা পড়েনি। এ বাবদ ৩৩ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সব মিলিয়ে সুদীপ দত্তের বিরুদ্ধে ২০০টি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলেছে বিমলবাবুর দাবি।

আরও পড়ুন: কর্মীরা তো ডিএ আশা করেনই, বলল হাইকোর্ট

আর্থিক টানাটানি ও উৎপাদনের সমস্যার জেরে গত তিন বছর ধরেই সংস্থার বেহাল দশা। ২০০৮ সালে বিএফআইআর থেকে ১৩০ কোটি টাকায় ইন্ডিয়া ফয়েলস কিনে নেয় এসডি অ্যালুমিনিয়াম। তখন ইন্ডিয়া ফয়েলস-এর কামারহাটি কারখানা প্রায় বন্ধের মুখে। হুগলির হয়রা কারখানা বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। নতুন মালিকানায় দু’টি কারখানাই চালু হয়।

তবে কম উৎপাদনের সমস্যা থেকেই গিয়েছিল। সঙ্গে যোগ হয় অ্যালুমিনিয়াম-সহ বিভিন্ন ধাতুর দাম পড়ে যাওয়ার সমস্যা। সব মিলিয়ে ৪৫০ কোটি টাকা ঢেলেও পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি সংস্থা। ঋণের ফাঁসে আটক সংস্থার অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়। কামারহাটি, হয়রার পাশাপাশি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় দমন, গোয়া, সিকিম ও বেঙ্গালুরুর কারখানায়।

২০১৬-র হিসেবে ৪৩০ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ সুদে-আসলে দাঁড়িয়েছে ৭০০ কোটি। স্টেট ব্যাঙ্ক, এলআইসি-সহ ১১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কনসোর্টিয়াম সংস্থার আর্থিক পুনর্গঠন প্রকল্প খতিয়ে দেখছিল। কারণ তখন সংস্থা দাবি করে, তারা ৩০০ কোটি টাকা ঢালবে এসডিজি ক্যাপিটালের মাধ্যমে। ১২৫ কোটি সম্প্রসারণে ও ১৭৫ কোটি কার্যকরী মূলধন হিসেবে ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেনি তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন