Annular Solar Eclipse

মেঘ সরে যেতেই দেখি জ্বলজ্বল করছে অগ্নিবলয়

বলয়গ্রাসের সর্বোচ্চ পর্যায় খুব কম সময়ের জন্য থাকে। মিনিটখানেকেরও কম।

Advertisement

দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৫:৩৪
Share:

গ্রহণের ক্রমপর্যায়। রবিবার নৈনিতাল থেকে তোলা। ছবি: দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

সকাল থেকে বারবারই মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছিল আকাশ, আবার সরে যাচ্ছিল। মেঘের সেই আনাগোনার ফাঁকেই ধরা পড়ছিল, কী ভাবে ধীরে ধীরে চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ছে মধ্য গগনের দিবাকর। এ ভাবেই চলতে চলতে হাজির হল মাহেন্দ্রক্ষণ। ঠিক তখনই টুক করে সরে গেল মেঘের আড়াল। কালো ছায়ার মতো তখন চাঁদের চারপাশে জ্বলজ্বল করছে অগ্নিবলয়। সূর্যের বলয়গ্রাস!

Advertisement

বলয়গ্রাসের সর্বোচ্চ পর্যায় খুব কম সময়ের জন্য থাকে। মিনিটখানেকেরও কম। এ দিন প্রকৃতি নিজের খেয়ালেই বলয়গ্রাস চলাকালীন মেঘের আড়াল রাখেনি। তার পরে ফের মেঘের আনাগোনা শুরু। তারই মধ্যে গ্রহণের শেষ পর্ব দেখেছি। নৈনিতালে এ দিন সূর্যের সর্বোচ্চ ৯৬-৯৭ শতাংশ চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়েছিল।

আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকেই রবিবার গ্রহণ দেখার আয়োজন ছিল। বর্ষাকালে মেঘের বিড়ম্বনা থাকেই। কিন্তু মোটের উপরে মন্দ দেখিনি। এ দিন নতুন ব্যাপার হল, স্বচক্ষে গ্রহণ দেখার পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বহু মানুষের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ, গ্রহণ নিয়ে কথা বলার সুযোগ। অবশ্যই লকডাউনের প্রাপ্তি ওয়েবিনার ও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের প্রাচুর্যের সুবাদে। এ দিন আমাদের লাইভ সেশনে প্রচুর স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা ছিল, তাদের নানাবিধ উত্তরও দিতে হয়েছে।

Advertisement

আসলে মহাজাগতিক ঘটনা হিসেবে গ্রহণের নানাবিধ তাৎপর্য যেমন আছে, তেমন সমাজেও এর প্রভাব রয়েছে। আগে যখন গ্রহণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মানুষ জানত না, তখন তারা ভাবত, কোনও অশুভ শক্তি কাজ করছে। কিন্তু এখন আমরা জানি, সূর্য, চাঁদ এবং পৃথিবীর আপেক্ষিক অবস্থানের ফলেই এমন ঘটে। কিন্তু এখনও নানা কুসংস্কার সমাজে রয়েছে। এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে তাই সমাজের বৃহত্তর অংশের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে না তুললে আলোচনা না করলে, প্রশ্নের উত্তর না-দিলে কুসংস্কারের বাধা দূর হবে না।

এ দিন নৈনিতালের ছবি যেমন আমরা দেখিয়েছি, তেমনই লাদাখের হানলেতে বসানো ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্সের টেলিস্কোপের ছবিও পেয়েছি। লকডাউনে সব জায়গায় যাওয়ার সুযোগ ছিল না।

তাই নিজেদের মধ্যে তথ্য ও ছবি আদান-প্রদান করেছি। বিভিন্ন ওয়েবিনারে সোমক রায়চৌধুরী, দিব্যেন্দু নন্দীর মতো বিজ্ঞানীদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। আর পাঁচটা গ্রহণের তুলনায় বেশ অন্য রকমই কেটেছে দিনটি।

লেখক আর্যভট্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব অবজ়ার্ভেশনাল সায়েন্সেস-এর অধিকর্তা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন