দোষী সেই জ্যোতিষী, আজ সাজা ঘোষণা

বৃহস্পতিবার, মুর্শিদাবাদ জেলা দায়রা আদালতের বিচারক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এ দিন ওই রায় দিয়েছেন। প্রভা দাস, বিজয়া বসু এবং আত্রেয়ী বসু, তিন মহিলাকে খুনের অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮ এবং ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাকে। শুক্রবার, ওই মামলার সাজা ঘোষণা করা হবে বলে জেলা জজ আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায় জানিয়েছেন।

Advertisement

প্রাণময় ব্রহ্মচারী

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৯
Share:

নিত্যানন্দ দাস

পাঁচ বছর আগে, বহরমপুরের আশাবরী আবাসনে তিন মহিলা খুনের মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত জ্যোতিষী নিত্যানন্দ দাসকে শেষ পর্য়ন্ত দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার, মুর্শিদাবাদ জেলা দায়রা আদালতের বিচারক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এ দিন ওই রায় দিয়েছেন। প্রভা দাস, বিজয়া বসু এবং আত্রেয়ী বসু, তিন মহিলাকে খুনের অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮ এবং ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাকে। শুক্রবার, ওই মামলার সাজা ঘোষণা করা হবে বলে জেলা জজ আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায় জানিয়েছেন।

২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি বহরমপুরের কাদাই এলাকার ওই আবাসনের ‘ডি’ ব্লকের একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে বৃদ্ধা প্রভা দাস, তাঁর মধ্য চল্লিশের ভাইঝি বিজয়া বসু এবং বিজয়ার কিশোরী কন্যা আত্রেয়ীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আত্রেয়ীর ‘কালসর্প দোষ’ কাটানোর নামে তিন জনকে খুন করার দায়ে নিত্যানন্দকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘তিন নিরীহ মহিলাকে পরিকল্পনা করে খুন করার দায়ে বিচারককে নিত্যানন্দ দাসের সর্বাধিক সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবি জানানো হবে। সমাজের কাছে এই বার্তা পৌঁছনো জরুরি যে, নিরীহ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে খুন করলে সর্বাধিক সাজাই প্রাপ্য।’’

Advertisement

অন্য দিকে নিত্যানন্দের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় এ দিন আদালতে তাঁর মক্কলের বৃদ্ধা মা ও কিশোর পুত্রকে দেখিয়ে সর্বনিম্ন সাজার আর্জি জানান। তাঁর দাবি ছিল, ‘‘ইতিমধ্যে তাঁর মক্কেলের পাঁচ বছর কারাবাস করেছে। এখন তাকে সর্বনিম্ন সাজাই দেওয়া হোক।’’

তাঁর দাবি, মামলার রায়ে তাঁরা আদৌ সন্তুষ্ট নন, রায়ের বিরুদ্ধে শীঘ্রই হাইকোর্টে আবেদন জানাবেন তাঁর মক্কেল।

মামলার রায় জানতে আদালতে নিহত বিজয়া বসুর স্বামী দেবাশিস বসু উপস্থিত ছিলেন। তিনি রায় শেষে বলেন, ‘‘পাঁচ বছর ধরে স্ত্রী ও মেয়েকে হারিয়ে যন্ত্রণায় ভুগছিলাম, বিচারকের এই রায়ে সেই যন্ত্রণার কিছুটা উপশম হল, তবে বিচারক আসামীর ফাঁসির আদেশ দিলে শান্তি পাব।’’

মামলার অভিযোগকারী ইরা মিত্র ও তাঁর স্বামী কৃষ্ণাশিস মিত্র প্রথম থেকেই সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে সরব ছিলেন। তাঁরা বলেন, ‘‘বিচারক যেন দোষীকে এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেন, যাতে তাঁদের আত্মীয়দের মতো আর কোনও নিরীহ মহিলাকে খুন হতে না হয়।’’

মামলার রায় শুনতে সকাল থেকেই আদালতে হাজির ছিলেন, নিত্যানন্দের মা অঞ্জলি দাস। রায় শুনে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনিও বলছেন, ‘‘আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।’’

এ দিন মামলার রায় জানতে আদালত চত্ত্বরে ভিড় ছিল সকাল থেকেই। নিত্যনন্দকে আদালতে নিয়ে আসা এবং বিকেলে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ভিড় সামাল দিতে পুলিশকে নাজেহাল হতে হয়। ভিড়ের মধ্যে থেকেই উড়ে আসে, ‘‘নিত্যানন্দের ফাঁসি চাই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন