জনসঙ্ঘের পতাকা দেখে গাড়ি থেকে নেমেছিলেন বাজপেয়ী

জামশেদপুর বেশি দূর নয়। বলরামপুর থেকে সেখানে চলে গিয়েছিলেন জনসঙ্ঘের নেতা বিশ্বনাথ ঘোষ, মিতন সেন, রামঅবতার শর্মা, সীতারাম নিয়োগী, প্রমোদ কাটারুকারা।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

বলরামপুর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০০:১৮
Share:

স্মৃতি: বলরামপুরের ধর্মশালায় অটলবিহারী বাজপেয়ী। ফাইল চিত্র

আসার কথা ছিল না। কিন্তু হঠাৎ এক দুপুরে গ্রামের রাস্তায় থমকেছিল তাঁর গাড়ি। সেই টুকরো স্মৃতি ফিরে দেখছে বলরামপুর।

Advertisement

১৯৬৮ সালের কথা। অটলবিহারী বাজপেয়ী তখন জনসঙ্ঘের সহ-সভাপতি। আজও ছবির মতো সমস্ত ঘটনা যেন চোখের সামনে ভাসে প্রমোদ কাটারুকার। প্রমোদ বলরামপুরের বাসিন্দা। সেই সময়ে জনসঙ্ঘের সক্রিয় কর্মী। বলছিলেন, ‘‘অটলজির জামশেদপুর থেকে ধানবাদ যাওয়ার কথা ছিল। যেতে হতো আমাদের বলরামপুর ছুঁয়েই। কিন্তু এখানে তাঁর কোনও কর্মসূচি ছিল না।’’ এ দিকে, সমস্ত নেতা-কর্মী চাইছেন, তিনি গ্রামে আসুন।

জামশেদপুর বেশি দূর নয়। বলরামপুর থেকে সেখানে চলে গিয়েছিলেন জনসঙ্ঘের নেতা বিশ্বনাথ ঘোষ, মিতন সেন, রামঅবতার শর্মা, সীতারাম নিয়োগী, প্রমোদ কাটারুকারা। নেতৃত্বের কাছে তাঁদের ইচ্ছের কথা জানিয়ে অনুরোধ করছিলেন, বাজপেয়ী যেন একটি বার গ্রামে আসেন। প্রমোদ বলেন, ‘‘তখন বেলা ১১টা-সাড়ে ১১টা হবে। আমরা সবাই রাস্তায় পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। ওঁর গাড়ি আসতেই ছেলেরা পথ আটকায়। সঙ্ঘের পতাকা দেখে উনি নেমে আসেন। রাস্তার ধারে সরাফ ধর্মশালায় যেতে অনুরোধ করেন সবাই। উনি সানন্দে যেতে রাজি হয়ে যান।’’

Advertisement

আশি পার করে আজও প্রমোদের মনে পড়ে, বলরামপুরের প্রবীণ শিউচরনলাল কেজরিওয়াল সে বার বাজপেয়ীর গলায় মালা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘শিউচরণলাল তখন ছিলেন বয়সে বড়। সবাই মান্য করতেন।’’ আর বাজপেয়ী শুধু একগ্লাস জল খেয়েছিলেন। মিনিট দশেক বক্তৃতাও দেন। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল একটি স্মারকলিপি। বলরামপুরের লাক্ষা শিল্পের প্রসারের কথা মাথায় রেখে দাবি তোলা হয়েছিল, কিছু ট্রেন যেন এখানে স্টপ দেয়। নিকাশির সমস্যা ছিল। আরও ছিল দাবিদাওয়া। প্রমোদেরা সব জানিয়েছিলেন তাঁকে। সংসদের অধিবেশনে বিষয়গুলি তুলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন বাজপেয়ী। প্রমোদের ছেলে গোপাল কাটারুকা বলেন, ‘‘বাবা বাজপেয়ীজীর সঙ্গে বলরামপুর থেকে বোকারো পর্যন্ত গিয়েছিলেন।’’

সে দিনের সভায় ছিলেন জনসঙ্ঘের কর্মী রামঅবতার শর্মা। তাঁর ছেলে দীনেশ শর্মা বলেন, ‘‘বাবার কাছে যেটুকু শুনেছি, ওঁর কাছে লাক্ষা শিল্পে বিক্রয় কর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছিল। উনি সেই দাবি সংসদে তুলেছিলেন। পরে বিক্রয় কর প্রত্যাহার হয়ে যায়।’’ শুক্রবার দিনভর বলরামপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে বিজেপির উদ্যোগে প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে শোক মিছিল হয়েছে। দিনের শেষে প্রমোদ বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আপনজনকে হারালাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন