সান্দাকফু-ফালুটে দূষণ বাড়াচ্ছে গাড়ি

গাড়ির জন্য দূষণের মাত্রা বাড়ছে চড়চড়িয়ে। তাই সম্প্রতি সান্দাকফু-ফালুটে আবর্জনা সাফাই শিবিরের আয়োজন করেছিল একটি সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০৪:০৫
Share:

ফাইল চিত্র।

এখন সরাসরি গাড়িতেই সান্দাকফু। ভ্রমণার্থীরা বেজায় খুশি। কিন্তু ক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, গাড়ির জন্য দূষণের মাত্রা বাড়ছে চড়চড়িয়ে। তাই সম্প্রতি সান্দাকফু-ফালুটে আবর্জনা সাফাই শিবিরের আয়োজন করেছিল একটি সংগঠন।

Advertisement

‘ক্লিন অ্যান্ড হিল সান্দাকফু ট্রেল’ স্লোগান দিয়ে সংগঠনটি অভিযান শুরু করে। তাদের দাবি, ৪৩ কিলোমিটার রাস্তায় তারা পার করেছে ধোতরে, গৈরিবাস, কালাপোখরি, সান্দাকফু, গুরদুম ও শ্রীখোলা গ্রাম। গোটা রাস্তায় প্রায় ৬০ কিলোগ্রাম প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করেছে তারা— পলিথিনের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতল, বিয়ারের ক্যান, মদের বোতল, আরও অনেক বিচিত্র বর্জ্য। প্রতিটি গ্রামেই সংস্থাটি সচেতনতা শিবির করেছে। ‘‘রাজ্যের পরিবেশ রক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। তার মধ্যে হিমালয় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল,’’ বলছেন দলের অন্যতম সদস্য উদিত সেনগুপ্ত।

গত ২০ বছর ধরে সান্দাকফু-ফালুটে ফি-বছর বর্জ্য সাফাই শিবির করছেন পরিবেশকর্মী অনিমেষ বসু। তিনি জানান, কখনও বৃষ্টির আগে, কখনও বৃষ্টির পরে এই ধরনের শিবির হয়। এ বছর একটি সংগঠন বৃষ্টির আগে এই শিবির করায় তাঁরা যাবেন বৃষ্টির পরে। অনিমেষবাবুর বক্তব্য, ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল সান্দাকফু-ফালুট। কারণ, এটি সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের অংশ। ট্রেকারেরা এখানে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তখন এত বর্জ্য জমত না। কিন্তু রাস্তাটি গাড়ির জন্য খুলে দেওয়ার পরেই বর্জ্যের পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। সঙ্গে আছে বায়ুদূষণ। কিছু দিন আগে প্রশাসন দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১) পুরনো ল্যান্ড রোভার সেখানে আর তোলা যাবে না। ২) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোটরবাইকের যাতায়াত। ‘‘কিন্তু কিছুতেই কিছু হবে না, যদি না পর্যটকদের মানসিকতায় বদল ঘটে,’’ বলছেন অনিমেষবাবু। তাঁর সংগঠনের তরফে জানানো হয়, প্রতি গ্রামের মানুষ অত্যন্ত সচেতন। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করে তা পিটে জমানো হয়। সমতলে বর্জ্য পৃথকীকরণের প্ল্যান্ট তৈরি হলে পাহাড়ের বর্জ্য নীচে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।

Advertisement

হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ কর্নেল গুলশন চাড্ডা বলেছেন, ‘‘কয়েকটি সংগঠন সান্দাকফু-ফালুট অঞ্চলে বর্জ্য পরিষ্কার করে। আমরা এ বছর বর্ষার পরে জোংরি-গোচালায় একই কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, ওখানেও প্লাস্টিক বর্জ্য জমতে থাকায় পরিবেশের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে।’’ গত কয়েক বছরে হিমালয় অঞ্চলে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। এভারেস্ট বেস ক্যাম্পেও প্লাস্টিক সাফাইয়ের শিবির করতে হয়। পর্যটক, অভিযাত্রীরা সচেতন না-হলে বিষয়টি ভয়ানক দিকে মোড় নেবে বলে পরিবেশবিদদের আশঙ্কা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন