মাঝ রাতে ভস্মীভূত ১৭টি দোকান

বার্নপুরের ত্রিবেণী মোড় অঞ্চলে ইস্কো রোডের ডান দিকে সার দিয়ে রয়েছে কাপড়, জুতো, হেলমেট, মনিহারি, ভাত-রুটির হোটেল-সহ একধিক ঝুপড়ি দোকান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৩
Share:

সোমবার সকালে পুড়ে যাওয়ার পরে। ছবি: পাপন চৌধুরী

আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল প্রায় ১৭টি ঝুপড়ি দোকান। রবিবার রাত প্রায় আড়াইটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বার্নপুরের ত্রিবেণী রোড এলাকায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রাজ্য দমকলের দু’টি ও বার্নপুর ইস্কো কারখানার একটি ইঞ্জিন। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কী ভাবে এই আগুন লাগল, তা জানাতে পারেননি দমকলের কর্তারা। তবে দোকান মালিকদের একাংশ এই ঘটনাকে নাশকতা বলে অভিযোগ করেছেন। খবর পেয়ে এলাকায় গিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর সরবন সাও। তিনি প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

বার্নপুরের ত্রিবেণী মোড় অঞ্চলে ইস্কো রোডের ডান দিকে সার দিয়ে রয়েছে কাপড়, জুতো, হেলমেট, মনিহারি, ভাত-রুটির হোটেল-সহ একধিক ঝুপড়ি দোকান। রবিবার রাতে রাস্তার পাশে থাকা কোনও একটি দোকান থেকে আগুন ছড়ায় বলে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই বাজারেই কাপড়ের দোকান আছে গগণ রামের। তিনি জানান, ভোর তিনটে নাগাদ এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে ঘুম থেকে তুলে আগুন লাগার খবর দেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, আমার দোকান-সহ এলাকার সব দোকানই দাউ দাউ করে জ্বলছে। পরিস্থিতি এমনই ছিল যে, দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না।’’ সেখানেই মিষ্টির দোকান আছে ভোলা চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘আমার দোকানের কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই দোকানই ছিল আমার একমাত্র ভরসা। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।’’ দোকান মালিকেরা প্রায় সকলেই নরসিংহ বাঁধের বাসিন্দা। তাঁদের প্রত্যেকেরই আয়ের উৎস বলতে এই দোকান। কিন্তু আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় তাঁদের মাথায় বাজ ভেঙে পড়েছে। ভাত-রুটির হোটেল আছে সত্যরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘জানি না এ বার কী করব!’’ সকলেরই একই বক্তব্য, এই ক্ষতি পুষিয়ে ফের কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন বুঝতে পারছেন না।

সোমবার ভোরে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ভস্মীভূত দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মালিকেরা। অনেকেরই চোখে জল। কেউ আবার পুড়ে যাওয়া সামগ্রী থেকে বেঁচে যাওয়া অংশ খুঁজে বার করছেন। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন স্থানীয় ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরবন সাও। তিনি জানান, এখানে যাঁদের দোকান রয়েছে, তাঁরা গরিব পরিবারের। দোকানের সামান্য আয়ে তাঁদের সংসার চলে। কী ভাবে আগুন লাগল পুলিশকে তদন্ত করে দেখার আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া দোকান মালিকদের ক্ষতিপূরণের জন্য সরকার ও পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাব।’’

Advertisement

এ দিকে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানাতে পারেননি দমকলের আধিকারিকেরা। তবে ভাত-রুটির হোটেল থেকে আগুন ছড়ানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি দমকল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় দোকান মালিকদের একাংশের অভিযোগ, কেউ শত্রুতা করেও আগুন লাগিয়ে দিয়ে থাকতে পারেন। পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে থানায় কোনও অভিযোগ জমা না পড়লেও ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন