শুক্রবার আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর

বৈঠকের আগে বরাদ্দ কালনা হাসপাতালকে

বরাদ্দ চেয়ে এক-এক করে প্রকল্প রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল আগেই। কিন্তু এত দিন অনুমোদন মিলছিল না। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসার ঠিক আগে এক সঙ্গে ১৬টি প্রকল্পের জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা বরাদ্দের অনুমোদন পেল কালনা মহকুমা হাসপাতাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৭
Share:

কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র

বরাদ্দ চেয়ে এক-এক করে প্রকল্প রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল আগেই। কিন্তু এত দিন অনুমোদন মিলছিল না। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসার ঠিক আগে এক সঙ্গে ১৬টি প্রকল্পের জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা বরাদ্দের অনুমোদন পেল কালনা মহকুমা হাসপাতাল।

Advertisement

আচমকা এক সঙ্গে কেন এতগুলি প্রকল্পের অনুমোদন, সে ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তারা মুখ খুলতে চাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যদি জানতে পারেন, প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ চেয়ে এখনও মেলেনি, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। তাই হয়তো তড়িঘড়ি এই অনুমোদন।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, প্রকল্পগুলি দ্রুত রূপায়ণ করে স্বাস্থ্য পরিষেবা আরও উন্নত করা হবে।

বছরখানেক এই হাসপাতালের পাশে চালু হয়েছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। পাশাপাশি সিসিইউ, শিশুদের বিশেষ বিভাগ তৈরি-সহ নানা পরিকাঠামো উন্নত হওয়ায় এখান থেকে অন্যত্র রেফার করা রোগীর সংখ্যা কমেছে অনেকটাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বছর দুয়েক আগে মাসে যেখানে শ’দুয়েক প্রসব হত, এখন তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ছ’শোয়। পরীক্ষাগারে আগে হাজার পাঁচেক রোগীর নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা হত। এখন তা তিন গুন বেড়েছে। বড় অস্ত্রোপচারের সংখ্যা শ’খানেক থেকে বেড়ে হয়েছে প্রায় আড়াইশো। মাসে রোগীর সংখ্যা চার হাজারের আশপাশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে হাজার পাঁচেক। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যাও।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এ সব সত্ত্বেও ভাল পরিষেবা দেওয়ার জন্য আরও কিছু পরিকাঠামো উন্নতির প্রয়োজন ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেগুলি সম্পর্কে বিশদ রিপোর্ট পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতরে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেগুলির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসিইউ-তে সর্বক্ষণের বিদ্যুৎ পরিষেবা, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা, চিকিৎসকদের আবাসন ও সীমানা পাঁচিল তৈরি, শৌচাগার সংস্কার, পরীক্ষাগার তৈরি, হাসপাতালে রান্নাঘরের আধুনিকীকরণ, সুপারের কার্যালয়ের উন্নতি, প্রসূতি বিভাগের পরিকাঠামো বৃদ্ধি-সহ নানা কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্লাড ব্যাঙ্কের পাশে দোতলা ভবন তৈরি হবে। সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্যান্টিন-সহ নানা বন্দোবস্ত থাকবে।

কালনা মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাদ্দ অর্থে বাদলা এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিছু পরিকাঠামো তৈরি হবে। কালনা হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘প্রস্তাবিত সব পরিকল্পনার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। দ্রুত কাজ শুরু হবে। পরিষেবা আরও উন্নত হবে।’’

শুধু হাসপাতাল নয়, কালনা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পে পুর এলাকায় সাতটি পার্ক তৈরি, নানা জায়গায় বসার ব্যবস্থা, পার্কিং জোন, ২৩০০ পথবাতি, ৯৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। পুরসভার এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রথম পর্যায়ে এই কাজগুলির জন্য ৪ কোটি টাকা দ্রুত পাঠানো হবে বলে আশ্বাস মিলেছে।’’ কালনার এক জনপ্রতিনিধির কথায়, ‘‘এ সবই মুখ্যমন্ত্রী আসার সুফল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন