অপুষ্ট ৩৯১ শিশু, চালু হয়নি ‘পোষণ’ প্রকল্প

জেলার ২৩টি ব্লকের ৬৮১১টি কেন্দ্রে ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার শিশুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ওজন নেওয়া হয়। সেই নথি পর্যবেক্ষণের পরে ৩৯১ জন শিশু অপুষ্টিতে ভুগছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

—ছবি রয়টার্স।

অপুষ্টিতে ভোগা শিশু ও প্রসূতিদের জন্য যৌথ ভাবে ‘পোষণ’ প্রকল্প চালু করেছিল জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ওই প্রকল্পে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ভিটামিনযুক্ত বিশেষ খাবার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও সেই খাবার দিতে পারেনি প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকা জেলার সুসংহত শিশুবিকাশ বা আইসিডিএস দফতর।

Advertisement

জেলার ২৩টি ব্লকের ৬৮১১টি কেন্দ্রে ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার শিশুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ওজন নেওয়া হয়। সেই নথি পর্যবেক্ষণের পরে ৩৯১ জন শিশু অপুষ্টিতে ভুগছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের হিসেবে, প্রতিটি ব্লকেই অপুষ্টিতে ভোগা শিশু রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে জামালপুর, মেমারি ২ ব্লক। ওই শিশুদের পরিবারের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য এক জন করে সরকারি আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরিবারগুলিকে আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর করার চেষ্টাও চালানো হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গুরুগ্রামের একটি সংস্থাকে ওই বিশেষ খাবারের প্যাকেট সরবরাহের জন্য বরাত দিয়েছে আইসিডিএস দফতর। খাবার জেলায় চলেও এসেছে। কিন্তু তিন মাস কেটে যাওয়ার পরেও শিশুদের প্যাকেটজাত ওই খাবার দেওয়ার অনুমতি দেয়নি রাজ্যের সমাজ কল্যাণ দফতর। ফলে প্রশ্ন উঠেছে ওই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকারের অনুমোদন না নিয়ে ভিন্‌ রাজ্যের একটি সংস্থাকে কী ভাবে খাবারের বরাত দেওয়া হল?

Advertisement

আইসিডিএস-এর জেলা প্রকল্প আধিকারিক অনুপম দত্ত বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে দফতরের সচিবের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’’ রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিকেরা জানান, প্যাকেটজাত ভিটামিনযুক্ত খাবার সরকারের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। সেখানে খাবারের গুণগত মান দেখার পাশাপাশি শিশু বা গর্ভবতীদের কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, তা দেখা হবে। ছাড়পত্র পেলেই তবেই ওই খাবার আইসিডিএস কেন্দ্রে পৌঁছনোর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেবে রাজ্য সরকার।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার দাবি, ‘‘এই প্রকল্পের জন্য জেলা পরিষদ ১৭ লক্ষ টাকা আইসিডিএস দফতরকে ইতিমধ্যে দিয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুত রিপোর্ট চলে আসবে। তার পরেই পুষ্টিবর্ধক প্যাকেটজাত খাবার বিলি করা হবে।’’ জেলা প্রশাসনের দাবি, গুরুগ্রামের ওই সংস্থার কাছ থেকে ওই খাবার কিনে অপুষ্টি দূরীকরণে সফল হয়েছে রাজস্থান-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য। পরীক্ষামূলক ভাবে পূর্ব বর্ধমানের রায়না ২ ও খণ্ডঘোষ ব্লকের অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ওই খাবার দিয়ে ভাল মিলেছে বলেও কর্তাদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন