খুঁটি বসেছে কয়েক বছর, তবু অন্ধকারেই চার গ্রাম

কোথাও খুঁটি পোঁতা হয়েছে বছর কয়েক আগে। কোনও গ্রামে তা-ও হয়নি। ফলে, এখনও অন্ধকারে ডুবে আউশগ্রাম ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। সন্ধে নামার পরে ভরসা সেই হ্যারিকেন বা লণ্ঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বুদবুদ শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:৫৭
Share:

আমানিডাঙা গ্রামে চার বছর আগে বসেছে খুঁটি। —নিজস্ব চিত্র।

কোথাও খুঁটি পোঁতা হয়েছে বছর কয়েক আগে। কোনও গ্রামে তা-ও হয়নি। ফলে, এখনও অন্ধকারে ডুবে আউশগ্রাম ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। সন্ধে নামার পরে ভরসা সেই হ্যারিকেন বা লণ্ঠন। বাসিন্দাদের দাবি, বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা বিদ্যুতের জন্য দরবার হয়েছে। প্রতিশ্রুতি মিললেও এখনও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অবশ্য আশ্বাস, ওই সব এলাকায় বিদ্যুদয়নের ব্যবস্থা হচ্ছে।

Advertisement

আউশগ্রাম ২ ব্লকের একটা বড় অংশ জেলার জঙ্গলমহল এলাকা হিসেবে পরিচিত। সেখানকার বেশ কয়েকটি গ্রামের বড় সমস্যা বিদ্যুতের অভাব। বেশ কিছু গ্রাম রয়েছে যেখানে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। তার মধ্যে অধিকাংশ গ্রামই আদিবাসী অধ্যুষিত। জনসংখ্যাও অনেক। দেবশালা পঞ্চায়েতের মধ্যে এমনই চারটি গ্রাম রয়েছে। পাথুড়িয়া গ্রামে বাস করে ৫০-৬০টি পরিবার। মোরামের রাস্তা তৈরি হয়েছে। একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও রয়েছে। অথচ, গ্রামে পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। গ্রামের বাসিন্দা দশরথ হেমব্রম, পারু হেমব্রমরা জানান, তাঁদের আশপাশের প্রায় সব গ্রামেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়েছে। অথচ তাঁদের এখনও ভরসা হ্যারিকেন-লণ্ঠনের আলো। তাঁরা জানান, মাসখানেক আগে এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয়েছে। আগেও এক বার এলাকায় মাপজোক হয়েছিল বিদ্যুতের জন্য। কিন্তু তার পরে আর কোনও কাজ হয়নি। ফের তেমনই ঘটবে কি না, সেই সংশয় রয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

একই অবস্থা আমানিডাঙা গ্রামেরও। বছর চারেক আগে সেখানে এক বার খুঁটি পোঁতা হলেও তা আর কোনও কাজে লাগেনি। বাসিন্দারা বেশ কয়েক বার বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিস থেকে ব্লক প্রশাসন, নানা দফতরে দরবার করেছেন। কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। ওই গ্রামের বাসিন্দা সোম মাড্ডি, হিরু মাড্ডিরা জানান, খুঁটিগুলির বেশ কয়েকটি এক বার হাতি ঢুকে ভেঙেও দিয়ে গিয়েছে। আমানিডাঙার পাশেই রয়েছে বাবলাবুনি গ্রাম। সেখানেও ২০টি আদিবাসী পরিবারের বাস। নেই কোনও বিদ্যুৎ। গ্রামের বাসিন্দা সোম সোরেন বলেন, ‘‘রাতে দূরে অন্য গ্রামের আলো জ্বলতে দেখেই রাত কাটাই আমরা। আর ভাবি, আমাদের গ্রামে আলো জ্বলবে কবে!’’ একই অবস্থা নেদাতলা গ্রামেরও। স্থানীয় বাসিন্দা রামু মুর্মু, ভগিরথ হেমব্রমরা জানান, বেশ কয়েক বছর আগে এখানেও বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয়েছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, হয়তো এ বার আঁধার ঘুচবে। কিন্তু বছরের পর বছর খুঁটি দাঁড়িয়ে রয়েছে, তারের সংযোগ আর হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের।

Advertisement

আউশগ্রাম ২ বিডিও দীপ্তিময় দাসের অবশ্য আশ্বাস, রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের জন্য ওই সব গ্রামের নাম পাঠানো হয়েছে। ব্লকের অন্য বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুতের সংযোগ ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বর্ধমান শাখার তরফে জানানো হয়, রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন যোজনার কাজের আওতায় ওই সব গ্রামের নাম আছে। কিছু গ্রামে কাজও শুরু হয়েছে। সব গ্রামে শীঘ্রই বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন