অবৈধ ঘাট থেকে দেদারে চুরি হচ্ছে বালি। বিপজ্জনক ভাবে ভাঙছে অজয়ের পাড়। কোথাও ধ্বংসের মুখে বনাঞ্চল, কোথাও লোকালয়। আউশগ্রামের ভেদিয়ায় অবন সেতুর কাছে ছবি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
বর্ষায় দশ চাকার লরিতে বালি নিয়ে আসা-যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। তারপরেও দেদারে বালি চলেছে ওই সব লরিতে। এমনকী আঁধার নামলেই ওভারলোডিং হচ্ছে বলেও অভিযোগ পেয়েছিল পুলিশ। পরিস্থিতি হাতেনাতে দেখতে শনিবার রাতভর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ অভিযান চালায় জেলা পুলিশ। আটক করা হয় বালিবোঝাই ৪৩টি দশ চাকার লরি। গ্রেফতার করা হয় ৪৫ জনকে। জরিমানা বাবদ প্রায় ৫৪ হাজার টাকা আদায়ও হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ওই লরি চলাচল, ওভারলোডিংয়ের অভিযোগ আসছিল। তাই এই বিশেষ অভিযান।’’ তাঁর দাবি, এই ধরণের লরি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে দুর্ঘটনাও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
এমনিতেই এ জেলার দামোদর, অজয়ের উপর বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর অবৈধ বালির খাদান রয়েছে। তবে ওই সব বেআইনি খাদান বন্ধে প্রশাসনের গা নেই বলে অভিযোগ। যদিও মাঝেমধ্যে বালির গাড়ি ধরার জন্য রাতে হানা দেয় সেচ দফতর ও পুলিশ। বেশ কয়েক মাস আগে কাটোয়ার নতুনগ্রামে বালির গাড়ি ধরতে গিয়ে মার খান সেচ দফতরের আধিকারিক থেকে পুলিশের কর্মীরা। এ বার বর্ষার সময়েও ভরা নদী থেকে বালি তোলা হচ্ছিল বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ ছিল। তেমনই ওই সব খাদানে দশ চাকার লরি গিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে জন্য রাজ্য সরকার দশ চাকার বালির গাড়ির উপর বর্ষার সময় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে মেমারির আঝাপুর, কলেজ মোড়, বর্ধমানের শক্তিগড়, ফাগুপুর-সহ জেলার বিভিন্ন থানা এক সঙ্গে বেআইনি বালিবোঝাই লরি ধরতে তল্লাশি চালায়। দশ চাকার গাড়িগুলিকে আটক করা হয়। এ ছাড়াও যাঁদের কাছে বৈধ কাগজপত্র নেই তাঁদের গ্রেফতার করে আদালতে তোলে পুলিশ। ওভারলোডিংয়ের ক্ষেত্রেও নিয়মমাফিক জরিমানা আদায় করা হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, আটক হওয়া লরিগুলি হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, কলকাতা ও তার আশেপাশে এলাকার। ধৃতদের রবিবার জেলা আদালতে তোলা হলে জামিন মঞ্জুর করে দেন বিচারক। জেলা পুলিশের দাবি, মাঝেমধ্যেই এমন অভিযান চালানো হবে।