ধারাবাহিক অভিযানে ফল মিলেছে গ্রামীণ এলাকায়। কিন্তু শহরাঞ্চলে সে ভাবে সাড়া মেলেনি নির্মলা বাংলা অভিযানে— এমনই দাবি আসানসোল মহকুমা প্রশাসনের। সে কারণে আসানসোলের ১০৬টি ওয়ার্ডে প্রায় ৪৭ হাজার শৌচাগার গড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। শীঘ্রই এই কাজে হাত দেওয়া হবে বলে জানান শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
সম্প্রতি জামুড়িয়ার নিঘায় ভোরে মাঠে শৌচকর্মে গিয়ে দুষ্কৃতী হামলার মুখে পড়েন এক মহিলা। এই ঘটনার পরেই এলাকায় নির্মল বাংলা অভিযান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রশাসনের তরফে উদ্যোগ শুরু হয়। প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, আসানসোল মহকুমার চারটি ব্লক— সালানপুর, বারাবনি, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ার গ্রামগুলিতে ধারাবাহিক নজরদারি ও প্রচারে কাজ হয়েছে। সালানপুর ও বারাবনি ব্লককে নির্মল ঘোষণাও করা হয়েছে। কিন্তু প্রচার চালিয়েও আশানুরূপ ফল মেলেনি শহরাঞ্চলে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডে সরকারের আর্থিক অনুদানে প্রায় ৪৭ হাজার শৌচালয় তৈরি করা হচ্ছে। মহকুমাশাসক তথা পুরসভার কমিশনার প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যে একটি রূপরেখা তৈরি করেছি। দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০টি বরোয় সমান ভাগে শৌচালয়গুলি নির্মাণ করা হবে। যে সব বাড়িতে শৌচালয় নেই সেগুলি চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী প্রত্যেক উপভোক্তা ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাবেন। টাকা পেয়ে শৌচালয় নির্মাণ না করলে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও কাউন্সিলরদের অনেকের দাবি, ১০ হাজার টাকায় বিজ্ঞানসম্মত শৌচালয় তৈরি সম্ভব নয়। তাঁরা ইতিমধ্যে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে এই অনুদান বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার দাবি তুলেছেন। মেয়র তা ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।তিনি বলেন, ‘‘আমরা নির্মল বাংলার এই অভিযান সফল করবই। কারণ, খোলা স্থানে শৌচাকর্মে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি।’’
মহকুমাশাসক জানান, শুধু শৌচালয় গড়া হলেই নির্মল বাংলা অভিযান সার্থক হবে না। বরো স্তরে ধারাবাহিক প্রচার ও নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে জন্য আরসিএইচ এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাজে নামানো হয়েছে। এলাকা ভাগ করে ভোরে ওই কর্মীরা নজরদারি চালাবেন। সেই সঙ্গে শহরবাসীকেও সচেতন হতে হবে বলে আর্জি প্রশাসনিক কর্তাদের।