রাস্তার ডিভাইডারে অনেকটা অংশ পরপর ফাঁক রয়েছে, যেখান দিয়ে পারাপার করা যায়। নিজেদের সুবিধে মতো রাস্তা পেরোনোর জন্য ডিভাইডার নানা জায়গা কেটে নিয়েছেন এলাকাবাসীর একাংশ। সেখান দিয়েই চলে যাতায়াত। দ্রুত গতিতে ছুটে আসা গাড়ির সামনে পড়ে যান অনেকেই। ঘটে বিপদ।
রাস্তার উল্টো দিকে যেতে হলে অনেকটা ঘুরে আসতে হয়। তাই উল্টো লেন ধরে নেন অনেক গাড়ির চালক। যার জেরে সমস্যায় পড়েন ঠিক লেন ধরে আসা গাড়ির চালকেরা।
চার মাথার মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকলেও খেয়াল করেন না অনেক সাইকেল, মোটরবাইক চালক। ইচ্ছে মতো বাঁক নেন। ফলে, ঘটে যায় দুর্ঘটনা।
জাতীয় সড়ক-সহ এলাকার নানা বড় রাস্তায় বেশির ভাগ দুর্ঘটনার পিছনে এই ধরনের মর্জিমাফিক চলাফেরাই দায়ী, মনে করেন জাতীয় সড়ক (এনএইচ) কর্তৃপক্ষ। এ সব ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতে রাস্তাগুলিতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন তাঁরা। পুলিশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ৯-১৪ জানুয়ারি সেগুলি পালন করা হবে বলে জানান তাঁরা।
এনএইচ-এর আধিকারিকেরা জানান, ২ নম্বর জাতীয় সড়কে বেশ কিছু দুর্ঘটনাপ্রবণ অঞ্চল রয়েছে। দুর্ঘটনা কমাতে গাড়ির চালক ও পথচারীদের সচেতন করাই সমাধান বলে ধারণা তাঁদের। সংস্থার বিভাগীয় আধিকারিক মলয় দত্ত জানান, বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা কিছু ‘স্লাইড শো’-এর আয়োজন করা হয়েছে। তাতে গত এক বছরে জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাগুলির কারণ, কী ভাবে তা এড়ানো যায়— সে সব দেখানো হবে।
মলয়বাবু জানান, পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিঘা ও চাঁদা মোড়ে দুর্ঘটনার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। সেখানে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল দুর্ঘটনা থেকে রেহাইয়ের উপায় পথনাটিকা করে শেখাবেন। খড়্গপুর আইআইটি-র একটি বিশেষজ্ঞ দলকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে প্রচারও করা হবে। এ ছাড়া বড়িরা, মেলেকোলা, শীতলা, জেকে নগরের মোড়ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বাড়তি নজরের ব্যবস্থা হচ্ছে জানিয়ে মলয়বাবু বলেন, ‘‘ছয় লেন তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে মোড়গুলিতে আন্ডারপাস তৈরি হয়ে যাবে। তখন জাতীয় সড়কে আর দুর্ঘটনাপ্রবণ অঞ্চল থাকবে না।’’
পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (ট্রাফিক) রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘গত বছরও আমরা যৌথ কর্মসূচি নিয়েছিলাম। ডাক পেলে এ বারও থাকব।’’পুলিশ ও জাতীয় সড়কের কর্তারা জানান, নানা স্কুলে আলোচনাচক্র করে পড়ুয়াদের সচেতন করার পরিকল্পনা হয়েছে। পুলিশ জানায়, শুধু জাতীয় সড়ক নয়, এলাকার নানা বড় রাস্তাতেও বেশ কিছু দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গা রয়েছে। সেখানে বাড়তি নজড়দারি চালিয়েও দুর্ঘটনা সে ভাবে আটকানো যাচ্ছে না। এডিসিপি (ট্রাফিক) বলেন, ‘‘সচেতনতার অভাবই এর কারণ। আমরাও প্রচার শুরু করেছি।’’