Miner Death

‘হুমকির’ পরে অপমৃত্যু খনিকর্মীর, অভিযুক্ত নেতা

এলাকাবাসী উজ্জ্বলের দেহ খনিতে নিয়ে গিয়ে তাঁর নিকটাত্মীয়ের চাকরি ও মহেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অন্ডাল শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৪
Share:

ছোড়ায় খনিতে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত কেকেএসসি-র এক নেতা সাসপেন্ড করানোর হুমকি দেওয়ার পরে আত্মহত্যা করেছেন এক খনিকর্মী, সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে এমনই অভিযোগ করল মৃতের পরিবার। বৃহস্পতিবার ইসিএলের ছোড়া ৭/৯ পিট খনিতে কয়লা তোলার প্রক্রিয়া বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান পরিজনদের একাংশ। মৃত উজ্জ্বল পাত্র (৫৫) ছোড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। রাত পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত কেকেএসসি নেতা মহেন্দ্র সিংহ।

Advertisement

পরিবারের সদস্যদের দাবি, উজ্জ্বলের সঙ্গে ওই খনির কেকেএসসি-র শাখা সম্পাদক মহেন্দ্রের বিবাদ ছিল। মৃতের ছেলে মুন্না সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে জানান, কর্মক্ষেত্রের কিছু কারণের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর বাবাকে সাসপেন্ড করার হুমকি দেন মহেন্দ্র। এর পরে দু’জনের মধ্যে বচসা বাধে। বুধবার সকালে মহেন্দ্রের নেতৃত্বে ঘণ্টাখানেক খনি বন্ধ করে উজ্জ্বলকে সাসপেন্ড করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁর বাবাকে জানানো হয়, খনি চত্বরে এসে মহেন্দ্রের কাছে ক্ষমা না চাইলে তাঁকে সাসপেন্ড করা হবে। এর পরেই, বাড়ির পাশেই খামারবাড়িতে ঢুকে দড়ির ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন উজ্জ্বল।

এলাকাবাসী উজ্জ্বলের দেহ খনিতে নিয়ে গিয়ে তাঁর নিকটাত্মীয়ের চাকরি ও মহেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। রাত ৮টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত চলছে। মুন্নার বক্তব্য, “আগে চাকরি দেওয়া হোক। তার পরে আমরা লিখিত অভিযোগ করব।”

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিটুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রবীর মণ্ডল, বিএমএস-এর জেলার যুগ্ম-সম্পাদক সৈকত চট্টোপাধ্যায়দের কার্যত এক সুরে বক্তব্য, “শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব শ্রমিকের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা। কিন্তু তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অনেকেই নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা উল্টে শ্রমিকদের উপরে বিভিন্ন চাপ তৈরি করেন।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কেকেএসসি-র সাধারণ সম্পাদক হরেরাম সিংহ। পাশাপাশি, “শুনেছি, সংগঠনের কার্যালয়ে গিয়ে সদস্যদের গালিগালাজ ও খনিকর্মীদের একাংশের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন উজ্জ্বল। তাই তাঁকে সাসপেন্ড বা বদলির দাবি জানিয়েছিল সংগঠন।” এ দিকে, মৃতের পরিবারের অভিযোগ প্রসঙ্গে অবশ্য হরেরাম কোনও সদুত্তর দেননি। তাঁর সংযোজন: “উজ্জ্বল কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা বলা যাবে না।”

পাশাপাশি, খনি কর্তৃপক্ষ জানান, মৃতের নিকটাত্মীয়কে চাকরিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন