যুবক খুন কাঁকসায়, ধৃত স্ত্রী ও প্রেমিক

মাস পাঁচেক আগে বারাসতে প্রেমিক অজিত রায়ের সঙ্গে ছক কষে স্বামীকে খুন করানোর অভিযোগ উঠেছিল মনুয়া মজুমদারের বিরুদ্ধে। দশমীর সকালে কাঁকসার জামদহে চঞ্চল ওরফে বাপন ঘোষ (২৭) নামে ওই যুবককে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে স্ত্রী রিয়া ও তাঁর ‘প্রেমিক’ ঝন্টু মণ্ডলকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকসা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে যুবকের রক্তাক্ত দেহ। বিছানায় পড়ে বন্দুক ও একটি গুলির খোল। শনিবার সকালে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় এই খুনের ঘটনায় ফিরে এল মনুয়া-কাণ্ডের ছায়া।

Advertisement

মাস পাঁচেক আগে বারাসতে প্রেমিক অজিত রায়ের সঙ্গে ছক কষে স্বামীকে খুন করানোর অভিযোগ উঠেছিল মনুয়া মজুমদারের বিরুদ্ধে। দশমীর সকালে কাঁকসার জামদহে চঞ্চল ওরফে বাপন ঘোষ (২৭) নামে ওই যুবককে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে স্ত্রী রিয়া ও তাঁর ‘প্রেমিক’ ঝন্টু মণ্ডলকে। রিয়া ও ঝন্টু পরিকল্পনা করে এই খুন করেছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। তাতে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ঝন্টুর বাবা বিজয়বাবু ও মা পূর্ণিমাদেবীকে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে লাউদোহার সরপির বাসিন্দা রিয়া ঘোষের বিয়ে হয় জামদহ গ্রামের চঞ্চলের সঙ্গে। তাঁদের একটি বছর তিনেকের মেয়েও রয়েছে। স্ত্রী, মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা অজিতবাবুকে নিয়ে সংসার চঞ্চলের। গ্রামের মোড়েই একটি সাইকেল সারাইয়ের দোকান রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া নিজেদের জমিতে চাষাবাদও করতেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বছরখানেক ধরে চঞ্চলের স্ত্রী রিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী যুবক ঝন্টুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঝন্টু গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ করে। অজিতবাবুর অভিযোগ, ‘‘ছেলে বাড়িতে না থাকলেই ঝন্টু আসত। আমি বারণ করতাম। কিন্তু ওরা পাত্তা দিত না।’’ তিনি জানান, শুক্রবার বিকেলে রিয়া মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান।

Advertisement

অজিতবাবুর দাবি, শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ তিনি বাইরে বেরিয়েছিলেন। তখন চঞ্চল ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পরে ফিরে দেখেন, ঘরের মেঝেতে ছেলের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। চঞ্চলের বন্ধু মলয় ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা গিয়ে দেখি, ওই ঘরেরই বিছানায় রিভলবার ও গুলির খোল পড়ে রয়েছে।’’ পুলিশ পৌঁছলে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, বন্দুকটি ঝন্টুর। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। রিয়া ও ঝন্টুকে গ্রেফতারের দাবিতে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠাতে বাধা দেওয়া হয়। পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। অজিতবাবু কাঁকসা থানায় ঝন্টু, তার বাবা-মা ও রিয়ার নামে লিখিত অভিযোগ করেন।

পুলিশ জানায়, সকালে খবর পেয়ে রিয়া বাপের বাড়ি থেকে এলে তাঁকে আটক করা হয়। দুপুরে জামদহ থেকে প্রায় বারো কিলোমিটার দূরে কুলডিহা গ্রামে একটি হোটেলে থেকে ধরা হয় ঝন্টুকে। পুলিশের দাবি, জেরায় রিয়া ঝন্টুর সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও খুনের ব্যাপারে কিছু জানা নেই বলে দাবি করেছেন। পুজো উপলক্ষে তিনি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন বলেও তাঁর দাবি। বন্দুকটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে আততায়ী সেটি ঘটনাস্থলে ফেলে গেল কেন, সে নিয়ে ধন্দে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন