রবিবার জামালপুরের কোলসোরা মোড়ে দুর্ঘটনার পরে চলছে উদ্ধারকাজ। ডান দিকে, এ ভাবেই নিত্য চলাচল ট্রেকারে। নিজস্ব চিত্র
ফের দুর্ঘটনার কবলে পড়ল ট্রেকার। রবিবার সকালে জামালপুরের কোলসোরা মোড়ে ট্রেকার ও ম্যাটাডরের মুখোমুখি ধাক্কায় ২২ জন যাত্রী জখম হয়েছেন। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মূল হাসপাতাল ও অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুই হাসপাতাল মিলিয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় ৭ জন ভর্তি রয়েছেন। দু’জনকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।
ট্রেকারের উৎপাত নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ বহু। মেমারি, রায়না, জামালপুর এলাকায় ট্রেকারের দৌরাত্ম্য চরমে। ট্রেকারের পা-দানি থেকে ছাদে যাত্রী নিয়ে বাসের সঙ্গে রেষারেষি করে। দ্রুত গতিতে যাতায়াতের ফলে মাঝে-মাঝেই ট্রেকারগুলি দুর্ঘটনায় পড়ে। অনেক সময়ে ভিড় ট্রেকার থেকে পড়ে যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। এ নিয়ে জেলার নিরাপত্তা-বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। ট্রেকারের উৎপাত বন্ধের জন্য পরিবহণ দফতর অভিযানও চালিয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দ্রুত গতিতে জামালপুরের চকদত্তপাড়া থেকে জিতু খাঁ রোড ধরে মেমারি যাচ্ছিল ট্রেকারটি। মেমারি-জৌগ্রাম রাস্তার উপরে কোলসোরার কাছে একটি বাঁকের মুখে উল্টো দিক থেকে ধানের তুষ নিয়ে আসা একটি ম্যাটাডোরের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দু’টি গাড়িই রাস্তার ধারে জমিতে উল্টে পড়ে। দু’টি গাড়ির চালক ও ট্রেকারের যাত্রীরা জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের বর্ধমানে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মূল ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দু’জনকে ভর্তি রেখে বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। অনাময় হাসপাতালে ১৪ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন জন সেখানে ভর্তি রয়েছেন।
এ ভাবেই নিত্য চলাচল ট্রেকারে। নিজস্ব চিত্র
কয়েকজন আহতের দাবি, দ্রুত গতিতে মেমারির দিকে যাচ্ছিল ট্রেকারটি। উল্টো দিক থেকে তুষ বোঝাই গাড়ি আসছিল। ট্রেকারটি দ্রুত গতিতে পাশ দিতে গিয়ে ম্যাটাডরে ধাক্কা মারে। ম্যাটাডরটি রাস্তার পাশে উল্টে যায়। ট্রেকারটি কিছুটা ছিটকে গিয়ে জমির উপর পাল্টি খায়। আহত এক যাত্রীর বাবা বুদ্ধদেব পাল বলেন, “ওই রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘনঘন বাস না থাকায় ট্রেকারের উপরেই নির্ভর করেন যাত্রীরা।’’ স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণচন্দ্র পাল, সন্দীপ সামুই, উত্তম দাসদের অভিযোগ, “রাস্তার উপরে মারাত্মক বাঁকের জন্য বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। সেই সঙ্গে ট্রেকারের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখাও জরুরি।’’ জেলা পরিবহণ দফতরের আধিকারিক রানা বিশ্বাস বলেন, “আমরা মাঝেমধ্যেই অভিযান চালাই। ওই এলাকাতেও অভিযান চালানো হবে।’’