দুর্ঘটনা, রাস্তা কেটে অবরোধ

ভোর রাতে রাস্তার ধারে শৌচকাজে বেরিয়েছিলেন বৃদ্ধ মুন্সি মুর্মু (৬৭)। আচমকা পিছন থেকে আসা গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। বৃদ্ধকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হন আর এক পড়শিও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ০০:০০
Share:

রাস্তা কেটে অস্থায়ী হাম্প তৈরি করেন শিমুলিয়ার বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।

ভোর রাতে রাস্তার ধারে শৌচকাজে বেরিয়েছিলেন বৃদ্ধ মুন্সি মুর্মু (৬৭)। আচমকা পিছন থেকে আসা গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। বৃদ্ধকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হন আর এক পড়শিও। আগুন জ্বলে আশপাশের বাসিন্দাদের চাপা ক্ষোভে। বর্ধমান-কাটোয়া রোডের তিন জায়গা কেটে শুরু হয় অবরোধ। বন্ধ হয় বাস চলাচল। ঘণ্টা চারেক পরে পুলিশ আসায় বিক্ষোভ ওঠে।

Advertisement

মঙ্গলকোট থানার শিমুলিয়া আদিবাসী পাড়ার ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা হাম্প না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। দ্রুতবেগে আসা বাস, লরি, গাড়ি গতি নিয়ন্ত্রণ না করায় বিপদের মুখে পড়েন পথচলতিরা। বারবার প্রশাসনের কাছে জানানোর পরেও সুরাহা হয়নি বলে তাঁদের দাবি। রবিবারও এই দাবিতেই অবরোধ শুরু করেন শ’পাঁচেক আদিবাসী। বন্ধ হয়ে যায় বর্ধমান-কাটোয়া রোড চলাচল। বাসিন্দাদের দাবি, আহত মোংলা মুর্মুর চিৎকারে ভোরের দুর্ঘটনার কথা টের পান তাঁরা। লোকজন জুটে যায় কিছুক্ষণের মধ্যে। রাস্তায় হাম্প ও স্থানীয় নিগন চটি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গতিনিয়ন্ত্রনকারী বোর্ড লাগানোর দাবি করেন তাঁরা।

ভোর ৬টা থেকে কাটোয়া-বর্ধমান রাস্তার তিন জায়গায় রাস্তা কেটে পথ আটকান তাঁরা। কাটা রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি পেতে তার উপর মাটি, মোরাম চাপা দিয়ে অস্থায়ী হাম্প তৈরিও করে দেন। স্থানীয় অরুণ মুর্মূ, বাবুলাল হাঁসদাদের দাবি, সামনেই স্কুল রয়েছে। সেখানেও গতিনিয়ন্ত্রণকারী কোনও বোর্ড নেই। ফলে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁরা জানান, মাসখানেক আগেও ওই এলাকায় স্কুল থেকে ফেরার পথে মারুতি ভ্যানের ধাক্কায় এক ছাত্রী আহত হয়েছিল। কোদাল হাতে রাস্তা কাটতে কাটতে স্থানীয় নন্দ হাঁসদা, রবি মুর্মূরা বলেন, ‘‘রাস্তায় কোনও হাম্প নেই। তাই বড় গাড়ি জোরে এলে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে দুর্ঘটনা ঘটে।’’ বেলা ১২টা নাগাদ পুলিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এসডিপিও শচিন মাঁকড় জানান, কোনও লাঠিচার্জ ছাড়াই শান্তিপূর্ন ভাবে অবরোধ তুলে নেন গ্রামবসীরা। রাস্তা কেটে যে হাম্প তৈরি করেন তাঁরা সেগুলোকে স্থায়ী তৈরি করে দেওয়ার জন্য পূর্ত দফতরকে জানিয়েছি।

Advertisement

এ দিকে প্রায় ছ’ঘণ্টার অবরোধে ভোগান্তির শিকার হন বহু মানুষ। মুশকিল পড়েন নিত্যযাত্রী ও ব্যবসায়ীরা। পকেটে টান পড়ে বাসচালকদেরও। ওই পথ দিয়েই রোজকার মতো বাসে চড়ে বর্ধমানে কাজে যাচ্ছিলেন কাটোয়ার সাহেববাগানের মাধবী মাঝি। মাঝরস্তায় শিমুলিয়ার কাছে বাস থেমে যায়। নেমে ভ্যানে করে কোনওরকমে বলগোনা গিয়ে বর্ধমানগামী ট্রেন ধরেন তিনি। বাস কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র সেন বলেন, ‘‘কাটোয়া থেকে প্রতিদিন ১৫০টি বাস বর্ধমান যায়। এ দিন অবরোধের জেরে প্রায় কুড়ি শতাংশ বাস যেতে পারেনি। বাসগুলিকে নতুনহাট দিয়ে ঘুরে বর্ধমান যেতে হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন