কালনার দুর্গাপুর গ্রামে উল্টে যাওয়া বাস। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
অগ্রহায়ণের শেষেও রাজ্যে শীত তেমন ভাবে জাঁকিয়ে বসেনি বলে মনে করছেন আবহাওয়া দফতরের বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সকালের কুয়াশার জেরে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। শনিবারও জেলার দু’প্রান্ত, কালনার নান্দাই ও কাঁকসার রাজবাঁধে এমনই দু’টি দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, মোট প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। রাজবাঁধে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর তৈরি হয় যানজট। কুয়াশার জেরে দেরিতে চলেছে নানা ট্রেনও।
শনিবার সকালে নদিয়ার নবদ্বীপ থেকে একটি বেসরকারি বাস যাত্রী নিয়ে বাঁকুড়া যাচ্ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাসে নবদ্বীপ, শ্রীরামপুর ও সমুদ্রগড় এলাকার বেশ কয়েকজন বস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন। যাত্রীরা জানান, ভোর ৫টা ৪০ মিনিট নাগাদ দুর্গাপুর গ্রামে এসটিকেকে রোডের উপর বাঁকের মুখে আচমকা একটি লরি সামনে চলে আসে। দুর্ঘটনা এড়াতে চালক রাস্তার এক পাশে বাসটিকে নামাতে গিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাস উল্টে যায় নয়ানজুলিতে। আহত হন জনা দশেক যাত্রী। ওই বাসেই ছিলেন দুর্গাপুরের মুচিপাড়া এলাকার ব্যাবসায়ী সুবীর সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘ওই সময় রাস্তায় ঘন কুয়াশা থাকায় সামনে থাকা লরিটিকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল না।’’ জানা গিয়েছে, কাপড়ের গাঁট নিয়ে বাঁকুড়া যাচ্ছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনার জেরে বেশির ভাগ কাপড়ই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
নান্দাইয়ের বাসিন্দা তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক সেলিম শেখ জানান, স্থানীয় এক যুবক তাঁকে মোবাইলে পুরো ঘটনার কথা জানান। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করেন। আহতদের স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা ১০টা নাগাদ ক্রেনের সাহায্যে বাসটিকে তোলা হয়।
কুয়াশার জেরে শনিবার ভোরে কাঁকসাতেও একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই পানাগড়গামী ওই লরিটি রাজবাঁধের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর উল্টে যায়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, কুয়াশার কারণে রাস্তা ঠিক মতো বোঝা যাচ্ছিল না ওই সময়। লরির চালক ও খালাসির সন্ধান মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। লরিটি রাস্তায় উল্টে থাকায় প্রায় এক ঘণ্টার মতো যানজট তৈরি হয় রাস্তায়। পরে লরিটিকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকেই কালনা ও কাঁকসার বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘন কুয়াশা দেখা যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শনিবার সকাল প্রায় ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় পথচারী ও গাড়ির চালকদের। কালনার এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ফুট পাঁচেক দূরের গাড়িও দেখা যাচ্ছিল না। কোনওক্রমে যাতায়াত করতে হচ্ছিল।’’