নেশার প্রতিবাদ, অ্যাসিড প্রৌঢ়কে

কুলটির রাধানগরের সিনেমাহল লাগোয়া বস্তিতে বাড়ি রাজুবাবুর। পেশায় তিনি দিনমজুর। পুলিশকে জানিয়েছেন, অন্য দিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির উঠোনে ঘুমোচ্ছিলেন। রাত ১২টা নাগাদ মুখে-গলায় তরল কিছু ছিটকে লাগায় তাঁর ঘুম ভাঙে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫০
Share:

আক্রান্ত: আসানসোল জেলা হাসপাতালে রাজু শর্মা। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির আশেপাশে ফি দিন বসে গাঁজা, মদের ঠেক। সেখানে বাধে গণ্ডগোল, মারপিট। প্রতিবাদ করেছিলেন রাজু শর্মা নামে বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়। অভিযোগ, সেই রাগেই বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর উপরে অ্যাসিড-হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। বর্তমানে তিনি আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

কুলটির রাধানগরের সিনেমাহল লাগোয়া বস্তিতে বাড়ি রাজুবাবুর। পেশায় তিনি দিনমজুর। পুলিশকে জানিয়েছেন, অন্য দিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির উঠোনে ঘুমোচ্ছিলেন। রাত ১২টা নাগাদ মুখে-গলায় তরল কিছু ছিটকে লাগায় তাঁর ঘুম ভাঙে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় জ্বালা। রাজুর চিৎকারে বাড়ির ভিতর থেকে ছুটে আসেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা। জড়ো হন পড়শিরাও। মুখে-চোখে জল ছেটাতেও স্বস্তি মেলেনি। খবর পেয়ে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ রাজুবাবুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

কেন হল অ্যাসিড-হামলা?

Advertisement

সংবাদমাধ্যমের কাছে শুক্রবার রাজুবাবু অভিযোগ করেন, এলাকার কিছু পরিচিত ‘দুষ্কৃতী’ মাসখানেক ধরে নিয়মিত তাঁর বাড়ির উঠোনের কাছে সন্ধ্যাবেলায় গাঁজা-মদের আসর বসাচ্ছে। সেখানে গোলমাল, চিৎকার-চেঁচামেচি হচ্ছে। তাতে আপত্তি করলেই মিলছে ‘হুমকি’। রাজুবাবুর দাবি, ‘‘বুধবার ওই লোকগুলোর সঙ্গে আমার বেশ কথা কাটাকাটি হয়। ওরা বলেছিল, ‘তোকে দেখে নেব’। মনে হচ্ছে, সেই রাগেই ওরা আমার গায়ে অ্যাসিড ছুড়েছে।’’ তবে পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগপত্রে নির্দিষ্ট কারও নাম করেননি তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বস্তিবাসীর একাংশের ক্ষোভ, দুষ্কৃতীরা যে তাঁদের এলাকায় নিয়মিত নেশার আসর বসাচ্ছে, তা পুলিশ জানে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। রাজুবাবু প্রতিবাদ করাতেই দুষ্কৃতীরা খেপে গিয়েছে।

হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানিয়েছেন, অ্যাসিড-হামলায় জখম হলেও রাজুবাবুর অবস্থা স্থিতিশীল। তদন্তকারীদের অনুমান, সম্ভবত শৌচাগার সাফাইয়ে ব্যবহৃত মিউরিয়েটিক অ্যাসিড ছু়ড়েছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পশ্চিম) অগ্নীশ্বর চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা নেশার আসরের খবর পেলেই অভিযান চালাই। অ্যাসিড-হামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন