বিরল রোগাক্রান্ত দু’জনের পাশে প্রশাসন

এক জনের শরীরের ওজন বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। অন্য জনের সমস্যা ওজন কমে যাওয়া। এমনই বিরল রোগাক্রান্ত দুই কিশোরের চিকিৎসার ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিল কালনা মহকুমা প্রশাসন। বুধবার প্রশাসনিক উদ্যোগেই ওই দু’জনকে পাঠানো হচ্ছে কলকাতার পিজি হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ১২:৩০
Share:

এক জনের শরীরের ওজন বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। অন্য জনের সমস্যা ওজন কমে যাওয়া। এমনই বিরল রোগাক্রান্ত দুই কিশোরের চিকিৎসার ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিল কালনা মহকুমা প্রশাসন। বুধবার প্রশাসনিক উদ্যোগেই ওই দু’জনকে পাঠানো হচ্ছে কলকাতার পিজি হাসপাতালে।

Advertisement

ওজন বাড়তে বাড়তে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল পূর্বস্থলীর আনোয়ার শেখের। স্কুল যাওয়া তো দূরের কথা, অত্যধিক ওজনের কারণে পাশ ফিরে শুতেও পারতো না। আনোয়ারের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিল কালনা মহকুমা প্রশাসন। কলকাতায় চিকিৎসা এবং যোগ ব্যায়ামে সাড়াও মিলছিল। যদিও ভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মাস তিনেক আগে কালনা মহকুমা হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। খবরের কাগজে আনোয়ারের কথা জেনেই নিজের ছেলেকে সুস্থ করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা মাথায় আসে রায়ান পঞ্চায়েতের হটুদেওয়ানের পীরতলার বাসিন্দা আনসুরা বিবির। ছেলে আব্দুল মিলনকে নিয়ে মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

মহকুমাশাসককে আনসুরা জানান, তাঁর স্বামী নেই, ঘুগনি বিক্রি করে সংসার চলে। ১৭ বছর বয়সেই আব্দুলের ওজন হয়েছে ১১০ কেজি, যা প্রতি মাসে ক্রমশ বাড়ছে। জানান, নানা জায়গায় ছেলের চিকিৎসা করেও লাভ হয়নি। দুবরাজদিঘি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বার মাধ্যমিকে বসা আব্দুল জানায়, সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত সমস্যা ছিল না। এর পরে হু হু করে ওজন বাড়তে থাকে। অত্যধিক ওজনে হাত-পায়ে যন্ত্রণা-সহ নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সে জানায়, বেশি কষ্ট হয় গরমে। শরীরের জ্বালা জুড়োতে স্নান করতে হয় অন্তত চার বার।

Advertisement

অন্য দিকে, ১৮ বছর বয়স হলেও পূর্বস্থলী ২ ব্লকের দেবনগর এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ গুইকে দেখতে লাগে আট বছরের মতো। পরিজনেরা মহকুমাশাসককে জানান, মাঝেমধ্যেই শরীরে রক্ত কমে যায় তাঁর। ওজন কমতে কমতে এখন চেহারা কঙ্কালসার। চিকিৎসাতেও ফল মেলেনি। মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে কালনা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা প্রথমে প্রসেনজিতকে পরীক্ষা করে দেখেন। তাঁরাই জানান, এই চিকিৎসার পরিকাঠামো তাঁদের কাছে নেই। এর পরেই ওই দুই কিশোরকে কলকাতায় পাঠানোর উদ্যোগ নেয় মহকুমা প্রশাসন।

এ দিন মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘দু’জনকেই বুধবার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে। চিকিৎসায় কতটা সাড়া মিলছে, সে দিকে নজর রাখবে মহকুমা প্রশাসন। ওদের সুস্থ করে পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়াই মূল লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন