একশো বছরেও লোকসান নেই কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে

চার বছর আগে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৬ শতাংশের উপর। আর চার শতাংশ বাড়লেই ব্যাঙ্কের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে টানাটানি পড়ে যেত। কিন্তু পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তিতে ভর করেই এই ক’বছরে অনুদায়ী ঋণের পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০১:২২
Share:

কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক। নিজস্ব চিত্র।

চার বছর আগে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৬ শতাংশের উপর। আর চার শতাংশ বাড়লেই ব্যাঙ্কের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে টানাটানি পড়ে যেত। কিন্তু পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তিতে ভর করেই এই ক’বছরে অনুদায়ী ঋণের পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে।

Advertisement

শতবর্ষের উৎসবের আগে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের এখন লক্ষ্য, অনাদায়ী ৬৯ কোটি টাকা আদায় করে ফেলা। জেলা কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ১০০ বছরের ইতিহাসে এই ব্যাঙ্ক একদিনের জন্যেও লোকসানের মুখ দেখেনি। যা রীতিমত গর্বের।” এই ব্যাঙ্কের সরকারি প্রতিনিধি তথা ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল বলেন, “খাদের কিনারা থেকে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ কমিয়ে এনেছে ব্যাঙ্ক। বাকি ঋণও আমরা আদায় করব।” আজ, বৃহস্পতিবার বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের শতবর্ষ উৎসবের সূচনা করবেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়।

ঋণ আদায় হল কী ভাবে? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, সাত জনের একটি মনিটরিং কমিটি গড়া হয়েছিল। সেই কমিটির প্রধান অমিত রজক বলেন, “ঋণ দেব না এই মনোভাব কারও ছিল না। আমরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ঋণ গ্রহীতার বাড়িতে গিয়ে আবেদন করতেই তা শোধ হয়েছে। বিভিন্ন কৃষি উন্নয়ন সমিতির বকেয়া থাকা ঋণও আদায় করতে পেরেছি।” বর্তমানে এই ব্যাঙ্কের ৩৮টি শাখায় সাত লক্ষেরও বেশি গ্রাহক রয়েছেন। শুধু মাত্র বর্ধমান শহরেই গ্রাহক সংখ্যা এক লক্ষের উপর। জেলা জুড়ে ব্যাঙ্কের নিজস্ব এটিএম রয়েছে। অমিতবাবুর কথায়, “রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির নিজস্ব ডেটাবেস নেই। আমাদের রয়েছে। জেলায় কৃষি ঋণের ৭০ শতাংশ আমাদের ব্যাঙ্ক দিয়ে থাকে। আমাদের অনুমোদনে ৫২০টি কৃষি উন্নয়ন সমিতি রয়েছে।”

Advertisement

ব্যাঙ্কের ইতিহাস বলছে, বর্ধমানে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার উদ্দেশে ১৯১৭ সালের ২২ জানুয়ারি শহরের টাউন হলে সভা করেন তৎকালীন জেলাশাসক পি এইচ ওয়াদ্দেল। তার কয়েক দিন পরেই ব্যাঙ্ক নিবন্ধীকরণ হয়। মাত্র আট হাজার টাকা মূলধন নিয়ে যে ব্যাঙ্ক শুরু হয়েছিল, ১০০ বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে তার মূলধন ৩৯ কোটি টাকা। বর্ধমান জেলা পরিষদের অন্যতম কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ হাজরা চৌধুরীর কথায়, “এই ব্যাঙ্ক বর্ধমান জেলার আবেগ। সামনের দিনগুলি যাতে আরও মসৃণ ভাবে চলে তার দেখার দায়িত্ব সবার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন