সম্পর্কে আপত্তি, প্রেমিকার মা-কে অ্যাসিড

সম্পর্কে আপত্তি জানানোয় শেষপর্যন্ত ‘প্রেমিকা’র মাকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠল এক বিবাহিত যুবক ও তার সঙ্গীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান শহরের সর্বমঙ্গলাপাড়ার ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০১:২০
Share:

সম্পর্কে আপত্তি জানানোয় শেষপর্যন্ত ‘প্রেমিকা’র মাকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠল এক বিবাহিত যুবক ও তার সঙ্গীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান শহরের সর্বমঙ্গলাপাড়ার ঘটনা।

Advertisement

মুখ, ঘাড়, হাতে ক্ষত নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন বছর আটচল্লিশের ওই মহিলা। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তেরা অ্যাসিড কোথা থেকে পেল, জানা যায়নি তা-ও।

এ দিন পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিবাহিত ‘প্রেমিকের’ সঙ্গে সম্পর্ক যাতে না রাখেন তার জন্য বার বার নিজের বছর তেইশের বড় মেয়েকে বলতেন আক্রান্ত ওই মহিলা। এ নিয়ে বাড়িতে নিত্য অশান্তি লেগেই থাকতো। দিন তিনেক আগে সেই মেয়ে বাড়ি ছেড়ে হঠাৎই চলে যান। আক্রান্ত মহিলার পরিবারের দাবি, খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারে, মেয়েটির ‘প্রেমিক’ এবং স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে ছোট্টুর মদতেই বাড়ি ছেড়েছেন তাদের মেয়ে।

Advertisement

আক্রান্ত মহিলার অভিযোগ, মেয়েকে ফেরানোর জন্য ফোন করলে, অভিজিৎ তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। শুধু এখানেই থামেনি অভিযুক্তরা। পরে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গালিগালাজ করে দরজায় বাঁশের বাড়ি মেরে চলে যায়। বুধবার সে ব্যাপারে থানায় একটি ডায়েরিও করেন তিনি।

পরের ঘটনা বৃহস্পতিবারে। এ দিন রাতের বেলায় বাড়ির কাছেই এক দোকান থেকে চপ কিনে ফিরছিলেন ওই মহিলা। তাঁর অভিযোগ, সেই সময় এলাকার বাসিন্দা অনির্বাণ রায় ওরফে চন্দনের সঙ্গে একটি মোটরবাইকে চেপে সেখানে হাজির হয়ে অভিজিৎ তাঁর গায়ে অ্যাসিড ছোড়ে। মহিলার দাবি, ‘‘কেন ওদের সম্পর্কে আপত্তি করেছি, পুলিশের কাছে গিয়েছি— সেই রাগেই আমাকে অ্যাসিড মেরেছে ওরা।’’

কিছু দিন আগেও জেলায় অ্যাসিড হানার অভিযোগ উঠেছিল। গত বছর অগস্ট মাসে বর্ধমান জেলার বাঘনাপাড়ায়, এবং ডিসেম্বরে পূর্বস্থলীতে দুই তরুণীকে অ্যাসিড ছুড়ে মারে আততায়ীরা। তবে অভিযুক্তেরা কোথা থেকে অ্যাসিড জোগাড় করেছিল, এখনও তার সন্ধান পায়নি পুলিশ। বর্তমানে জেলায় কত জনের অ্যাসিড বিক্রি করার বৈধ লাইসেন্স আছে, সে তথ্যও প্রশাসনের কাছে নেই। যদিও সুপ্রিম কোর্ট বারবারই এ ব্যাপারে সজাগ হতে বলছে। সম্প্রতি প্রশাসন জেলার সব হার্ডওয়্যারের দোকান, এমনকী, স্কুল-কলেজের পরীক্ষাগারে কত অ্যাসিড মজুত করা হয়, কী
ভাবে তা খরচ করা হয় সে হিসেব রাখতে বলেছে। কিন্তু ‘ফস্কা গেরো’ যে রয়ে গিয়েছে এ দিনের ঘটনা তার প্রমাণ।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিজিৎ ও চন্দন পলাতক। দু’জনের বাড়িতেই তালা ঝুলছে। এসডিপিও (বর্ধমান সদর) সৌমিক সেনগুপ্ত বলেন, “আমি নিজে বিষয়টি দেখছি। অভিযুক্তেরা ধরা পড়লেই কী অ্যাসিড, কোথা থেকে পেয়েছে তা জানা যাবে।”

আক্রান্ত মহিলার মেয়ের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মোবাইল বন্ধ। এসএমএসের জবাব আসেনি। বধূটির আক্ষেপ, ‘‘মেয়ের ভাল ছাড়া অন্য কিছু চাইনি। তাই কি আজ আমার এই দশা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন