গতি কমে না, বারবার দুর্ঘটনা রাজ্য সড়কে

সোমবার দুর্ঘটনা ঘটল সেই রাস্তাতেই। মৃত্যু হল এক পুলিশকর্মীরই। এই পরিস্থিতিতে পথ-নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

পানাগড়-ইলামবাজার সড়কে বারবার দুর্ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে এ বিষয়ে পুলিশকে দ্রুত পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দেন। তার পরেও সোমবার দুর্ঘটনা ঘটল সেই রাস্তাতেই। মৃত্যু হল এক পুলিশকর্মীরই। এই পরিস্থিতিতে পথ-নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কে পানাগড় থেকে ইলামবাজার পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে কাঁকসা থানা এলাকার মধ্যে। ওই অংশে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দেখা গিয়েছে। অথচ, বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের চেক পোস্ট, স্পিড ব্রেকার রয়েছে। তার পরেও দুর্ঘটনায় বিরাম নেই।

সম্প্রতি বীরভূমের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘চালকেরা এতই বেপরোয়া যে পুলিশকর্মীদেরও চাপা দিয়ে চলে যায়।’’ এ দিনের দুর্ঘটনা ফের তা প্রমাণ করে দিল! ওই রাজ্য সড়কে এক সময় বেহাল রাস্তার জন্য দুর্ঘটনা ঘটত। পরে রাস্তা সংস্কার করে ঝাঁ চকচকে করা হয়। যানবাহনের গতি বাড়ে। তার সঙ্গে বাড়ে দুর্ঘটনাও, মত এলাকাবাসীর।

Advertisement

কিন্তু কেন এমন ঘটনা বারবার?

বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক বছরে ওই রাজ্য সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। অতি ব্যস্ত সড়ক হলেও তা একমুখী (‘ওয়ান ওয়ে’) নয়। তা ছাড়া ট্রাক, ট্রেলারের ‘ওভারটেক’ করার প্রবণতাও খুব বেশি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। এ ছাড়াও ওই সড়কে বেশ কিছু বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। দোমড়া, ধোবারু, বেলডাঙা মোড়ের বাঁকগুলি অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। ইলামবাজারের দিকে যাওয়ার সময়ে কুনুরের সেতুর আগেও একটি বড় বাঁক রয়েছে। ওই সব বাঁকে উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ি নজরে আসে না অন্য দিক থেকে যাওয়া গাড়ির চালকদের। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া রাস্তার ধারে ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখা, তা-ও দেখা যায়।

তবে পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। পানাগড় থেকে ইলামবাজার সেতু পর্যন্ত অংশে পিচের ‘স্পিড ব্রেকার’ তৈরি করা হয়েছে। ত্রিলোকচন্দ্রপুর, রঘুনাথপুরে, বেলডাঙা প্রভৃতি মোড়ে অস্থায়ী প্লাস্টিকের ডিভাইডার দিয়ে আসা-যাওয়ার রাস্তা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মাঝেসাঝেই ‘স্পিড গান’ দিয়ে গতি পরীক্ষা করানো হচ্ছে। বসুধায় ‘চেকপোস্ট’ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা রাতে যানবাহন থামিয়ে ঘুম তাড়াতে চালকদের চোখে জল দিতেও উদ্যোগী হয়েছেন। তবে সারা রাস্তায় একটিও টাওয়ার তৈরি করা হয়নি এখনও পর্যন্ত।

যদিও এসিপি (ট্র্যাফিক) শাশ্বতী কর্মকার বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় এ বার এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনার হার ৩২ শতাংশ কমানো গিয়েছে। আরও কমানোর জন্য লাগাতার চেষ্টা চলছে। কর্তব্যরত পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের আরও সতর্ক হয়ে ‘ডিউটি’ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন