স্কুলের জামার বরাত নিয়ে বিতর্ক, ক্ষোভ

নির্দেশ ছিল, সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় স্কুল পড়ুয়াদের পোশাক কেনায় কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না জেলা বা ব্লক প্রশাসন। কিন্তু ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় পঞ্চায়েতের একএকটি ক্লাস্টারকে বিডিওরা পোশাক সরবরাহের দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৭ ০০:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

নির্দেশ ছিল, সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় স্কুল পড়ুয়াদের পোশাক কেনায় কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না জেলা বা ব্লক প্রশাসন। কিন্তু ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় পঞ্চায়েতের একএকটি ক্লাস্টারকে বিডিওরা পোশাক সরবরাহের দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ডান ও বাম শিক্ষক সংগঠনগুলিও আপত্তি জানিয়েছেন।

Advertisement

গত ২৪ এপ্রিল একটি চিঠির উত্তরে রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের অধিকর্তা জানিয়েছেন, স্কুলস্তরেই ছাত্রছাত্রীদের পোশাক কিনে বিলি করতে হবে। ৯ মার্চ সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরীও নির্দেশ দিয়েছেন, ব্লক স্তর বা এসআই দফতরও পোশাক কেনায় জড়াবে না। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পোশাক তৈরির জন্য জেলায় ইতিমধ্যেই ৫ কোটি ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা এসেছে। পড়ুয়া পিছু ৪০০ টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। তাদের ওই টাকায় ২টি করে স্কুলের পোশাক তুলে দিতে হবে। বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা জানান, পোশাক তৈরির টাকা স্কুলের অ্যাকাউন্টে আসছে। তাঁদের ‘ইউটিলাইজেশন শংসাপত্র’ জেলায় জমা দিতে হবে। অথচ পড়ুয়াদের পোশাক তৈরি হচ্ছে বিডিও-দের নির্দেশে। তাঁরা বলেন, “মহিলাদের আর্থিক উন্নতির জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের নিয়ে গঠিত ‘ক্লাস্টার’কে পোশাকের দেওয়া খুবই ভাল উদ্যোগ। কিন্তু ওই গোষ্ঠীগুলির হাতে আমরা টাকা তুলে দেব। ওরা মাপ নিয়ে গিয়ে পোশাক দিয়ে চলে যাবে। পোশাকের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আমরা মুশকিলে পড়ব।’’

বিডিওদের যদিও দাবি, গত নভেম্বরে তৎকালীন জেলাশাসক তথা জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প অধিকর্তা সৌমিত্র মোহনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের নিয়ে গঠিত ‘ক্লাস্টার’কে দিয়ে স্কুলের পোশাক তৈরির বরাত দিতে হবে। সেই মতো পঞ্চায়েত পিছু একটি করে ‘ক্লাস্টার’কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি তপন পোড়েলের অভিযোগ, “ওই নির্দেশে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা ছিল। সেখানে বিডিওরা নির্দেশ চাপিয়ে দিয়েছেন। আমরা আগামী সপ্তাহে বিডিওদের প্রশ্ন করব।’’ বাম শিক্ষক সংগঠনের নেতা স্বপন মালিকও বলেন, “বিডিওদের নির্দেশ মানতে গিয়ে প্রধান শিক্ষকদের বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” বর্তমান জেলাশাসক তথা প্রকল্প অধিকর্তা অনুরাগ শ্রীবাস্তবের যদিও দাবি, “চাপিয়ে দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। আলোচনার ভিত্তিতেই সব কাজ করতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন