সাম্প্রতিক শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো চাষের ক্ষতিপূরণের টাকা প্রকৃত চাষিদের কাছে না পৌঁছনোর অভিযোগে আউশগ্রাম ১ কৃষি দফতর ঘেরাও করলেন গুসকরা পুরসভার চাষিরা। বুধবার কৃষি উন্নয়ন আধিকারিককে দফতরে এসে প্রকৃত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবিতে প্রায় এক ঘন্টা ধরে বর্ধমান-সিউড়ি রোড অবরোধ করেন তাঁরা। পরে আউশগ্রাম থানার পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন আধিকারিক দেবতনু মাইতি চাষিদের সঙ্গে কথা বলে আগামী দশ দিনের মধ্যে প্রকৃত চাষিরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান তার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন। উঠে যায় দফতর ঘেরাও ও অবরোধ। এর আগে, সোমবারও ওই চাষিরা ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে বলে গুসকরা পুরসভা ও আউশগ্রাম ১ ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
স্থানীব সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরা পুরসভার ২৮ জন চাষির জন্য বোরো চাষের ক্ষতিপূরণের টাকা এসেছিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে, ৮ জনের বেশি ক্ষতিপূরণের টাকা কেউ পাননি। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ একই পরিবারের এবং চাষ করেন না এমন পরিবারও ওই ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে। গুসকরা পুরসভার কাউন্সিলর রানু গায়েন ও রত্না গোস্বামীরা বলেন, “কৃষি উন্নয়ন অধিকর্তা নিজের মনমতো করে চাষিদের তালিকা তৈরি করে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। অথচ এলাকার চাষিরা ভাবছেন, আমরা এর মধ্যে জড়িয়ে রয়েছি।” স্থানীয় চাষি আব্দুল বাসাদ শেখ, মুজিবর শেখদের অভিযোগ, “ক্ষতিপূরণের টাকা প্রকৃত চাষিরা পাননি। আমাদের মতো চাষিরা জানতেও পারিনি, কবে, কখন এই টাকা দেওয়া হল। টাকা পাওয়ার নিয়মটাই বা কী?”
চাষিদের দাবি, এ দিন গোলমালের আঁচ পেয়ে কৃষি উন্নয়ন আধিকারিক দেবতনু মাইতি দফতর ছেড়ে অন্য জায়গায় লুকিয়ে ছিলেন। ঘেরাও চলাকালীন বিভিন্ন আধিকারিকরা বারবার ফোন করে জানান, পরিস্থতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাতেও তিনি না আসায় চাষিরা গুসকরার নদীপট্টি মোড়ে বর্ধমান-সিউড়ি রোড অবরোধ করেন। অবস্থা দেখে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ আসরে নামে। তাঁরা ওই আধিকারিককে আশ্বাস দেন, পুলিশের প্রহরায় তাঁকে নিয়ে আসা হবে। কোনও চাষি নিগ্রহ বা হেনস্থা করবে না। এই আশ্বাস পাওয়ার পর পুলিশের পাহারায় দফতরে আসেন তিনি। পরে পুলিশের সামনে দেবতনুবাবু বলেন, “যা হয়েছে, ভুল হয়েছে। আমি আগামী দশ দিনের মধ্যে ফের প্রকৃত চাষির তালিকা তৈরি করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করব।” পরে বিস্তারিত জানতে দেবতনুবাবুর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।