দিনভর রাস্তা দিয়ে অবৈধ বালির ট্রাক যাতায়াত করে। এর ফলে রাস্তা ও লাগোয়া নিকাশি নালাগুলি নষ্ট হতে বসেছে। এই অভিযোগে শুক্রবার সকালে তিনটি বালির ট্রাক আটকে বিক্ষোভ দেখালেন কাঁকসার পানাগড় বাজার এলাকার বাসিন্দারা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এর জেরে তাঁদের ব্যবসাও মার খাচ্ছে। অবরোধের ফলে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। একই অভিযোগে রানিগঞ্জেও বিক্ষোভ দেখানো হয়।
কাঁকসার দু’দিকে বয়ে গিয়েছে অজয়, দামোদর। মাঝে রয়েছে কুনুর নদ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তিনটি নদী থেকেই অবৈধ ভাবে বালি খনন চলছে। অথচ, ‘মাইনস অ্যান্ড মিনারেলস অ্যাক্ট’-এর ২০১২ সালের সংশোধনী অনুযায়ী, সরকারি অনুমোদন ছাড়া নদী থেকে বালি তোলা যায় না।
দামোদর থেকে বালির ট্রাক পানাগড় স্টেশন রোড হয়ে দু’নম্বর জাতীয় সড়কে পৌঁছয়। স্টেশন রোড লাগোয়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দিনভর ওই রাস্তা দিয়ে কয়েকশো ট্রাক যাতায়াত করে। যার অধিকাংশই ‘ওভারলোডেড’ ও অবৈধ বলে দাবি। এর জেরে রাস্তা ও নিকাশি নালার ক্ষতি হচ্ছে। অনেক সময়ে রাস্তা, এমনকী দোকান, বাড়িতেও নোংরা জল উঠে আসছে বলে অভিযোগ। রবীন্দ্রনাথ দে, সুরেন্দ্র দাসদের মতো কয়েক জন ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ছোট রাস্তা, নোংরা জল মাড়িয়ে ক্রেতারা দোকানে আসতে সমস্যায় পড়ছেন। ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড়।’’
শুক্রবার সকালে বিক্ষোভের ফলে জাতীয় সড়ক থেকে পানাগড় স্টেশন পর্যন্ত বেশ কিছুক্ষণ যানজট হয়। পরিস্থিতি এমনই হয় যে, যানজটের জেরে রেলগেট বন্ধ করা যায়নি। ঘটনাস্থলে পৌঁছন কাঁকাস থানা ও স্টেশনের পুলিশকর্মীরা। বৈধ কাগজ না থাকায় তিনটি ট্রাককেই কাঁকসা থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের আশ্বাস, বালির বৈধ ট্রাকগুলি যাতে স্টেশন রোড এড়িয়ে রনডিহা মোড়ের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে, তা দেখা হবে।
বালির ট্রাক যাতায়াতের ফলে রাস্তা বেহালের অভিযোগ করে রানিগঞ্জ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে বিক্ষোভ দেখাল আসানসোল কোলফিল্ড কনট্রাকটর্স ওয়াকার্স ইউনিয়ন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অনল মুখোপাধ্যায় জানান, দামালিয়া থেকে হাড়াভাঙা পর্যন্ত দামোদর নদের পাড়ে চারটি বৈধ ও দু’টি অবৈধ বালিঘাট চলছে। রাস্তা খারাপ হওয়ায় মাঝেসাঝেই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তায় জল ছেটানো ও সাফাইয়ের জন্য ইসিএলের কাছে কর্মী নিয়োগেরও দাবি জানানো হয়। দফতরের আধিকারিক সুমন সরকার জানান, ফেব্রুয়ারির শেষে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে বৈঠকে করা হবে।