জোটহীন ভোট, দাঁইহাট দখলের স্বপ্ন সব দলের

জেলার সবচেয়ে ছোট পুর শহর দাঁইহাটে বোর্ড গড়তে দরকার মোট ৮টি আসন। সেই লক্ষ্যে কেউ পৌঁছাতে পারবে, না কি ত্রিশঙ্কু হবে পুরসভা—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সব রাজনৈতিক দল। এ বার দাঁইহাট পুর এলাকায় ভোটপ্রচারে নেমে রাজনৈতিক দলগুলি স্থায়ী পুরসভা গঠনের বিষয়টি তুলে এনেছিল। কারণ, দাঁইহাট পুরসভার ইতিহাসে নির্বাচনে জিতে আসা পুরবোর্ড বার বার ভেঙে গিয়েছে। ২০০০ সালে কংগ্রেস এই পুরসভা গঠন করেছিল।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

দাঁইহাট শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৩৫
Share:

জেলার সবচেয়ে ছোট পুর শহর দাঁইহাটে বোর্ড গড়তে দরকার মোট ৮টি আসন। সেই লক্ষ্যে কেউ পৌঁছাতে পারবে, না কি ত্রিশঙ্কু হবে পুরসভা—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সব রাজনৈতিক দল।

Advertisement

এ বার দাঁইহাট পুর এলাকায় ভোটপ্রচারে নেমে রাজনৈতিক দলগুলি স্থায়ী পুরসভা গঠনের বিষয়টি তুলে এনেছিল। কারণ, দাঁইহাট পুরসভার ইতিহাসে নির্বাচনে জিতে আসা পুরবোর্ড বার বার ভেঙে গিয়েছে। ২০০০ সালে কংগ্রেস এই পুরসভা গঠন করেছিল। ২০০২ সালের মাঝামাঝি কংগ্রেস ভেঙে যায়। কংগ্রেস ছেড়ে আসা কালিদাস রায় নতুন পুরপ্রধান হন। সিপিএম ও কংগ্রেস ছেড়ে আসা কাউন্সিলররা তাঁকে সমর্থন করেন। পরে ওই কাউন্সিলররা কালিদাসবাবুর উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছিলেন। তবে অনাস্থা না আসায় টানা ১৪ মাস পুরপ্রধান থেকে গিয়েছিলেন তিনি। ২০০৫ সালের পুরনির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল পৃথক ভাবে লড়াই করে। ভোট কাটাকুটিতে সিপিএম ক্ষমতায় পুরসভা দখল করে।

২০১০ সালে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট করে পুরভোটে লড়াই করে। ১৪টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৬টি, তৃণমূল ২টি. কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল একটি আসন পায়। বাকি ৫টি আসন পায় সিপিএম। কংগ্রেসের সন্তোষ দাসকে পুরপ্রধান করে জোট পুরবোর্ড গঠন করে। কিন্তু ২০১৪ সালের জুনে বোর্ড থেকে সমর্থন তুলে নেয় তৃণমূল। কংগ্রেস পুরবোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে গেলেও কিন্তু অনাস্থা না আসায় কংগ্রেস পুরবোর্ডেই থেকে যায়। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে এই পুর এলাকায় তৃণমূল ৫টি ও সিপিএম ৯টি আসন পেয়েছিল। দাঁইহাট শহরের নাগরিকদের একাংশের আক্ষেপ, নির্দিষ্ট কোনও একটি দলের হাতে বোর্ডের পুরো ক্ষমতা না থাকায় পুর উন্নয়ন বারবার ব্যাহত হয়েছে দাঁইহাটে।

Advertisement

গত শনিবার পুরভোটে রাজ্যের অন্যত্র অশান্তি হলেও দাঁইহাট শহরে ভোট হয়েছিল নির্বিঘ্নে। দিনের শেষে ভোট পড়েছিল ৮১ শতাংশ। জেলা কংগ্রেসের একটি সূত্রের অনুমান, গতবারের জেতা ৬টি আসন এ বার তারা ধরে রাখতে পারবে না। ২-৩টি আসন হারাতে পারে তারা। তবেল বদলে নতুন একটি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য দিকে তৃণমূলের দাবি, তাদের ঝুলিতে আসবে ৭টি আসন। তবে ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানো খুব কঠিন। সিপিএমের কর্মীদের একাংশের ধারণা, কংগ্রেস ও তৃণমূল--ভোট কাটাকুটির খেলায় লাভ পেলেও ৮টি আসন পাওয়া কঠিন। তবে প্রকাশ্যে তৃণমূল সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতারা অবশ্য বোর্ড গঠনের ব্যাপারে আশাবাদী। তৃণমূলের দাঁইহাট শহর কমিটির সভাপতি রঞ্জিত সাহা বলেন, “শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হয়েছে। উন্নয়নের জন্য মানুষ ভোট দিয়েছেন। আমরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব।” সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক তপন কোনারের আশা, এ বার বাম বোর্ড তৈরি হবে। অন্য দিকে প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য রাধানাথ ভট্টাচার্যের দাবি, “গত ৫ বছরে মানুষ আমাদের পুরবোর্ডের উন্নয়ন দেখেছেন। আমার ফের দাঁইহাটের দায়িত্ব পাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন