বেহাল রাস্তাও। নিজস্ব চিত্র
কোথাও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে পাড় বাঁধানো হওয়ায় জল ঢুকেছে গ্রামে। কোথাও বা দিনভর অতিরিক্ত বালি নিয়ে চলাচল করে ট্রাক। গলসির লোয়া-রামগোপালপুর পঞ্চায়েতের নবখণ্ড ও অমরপুর গ্রামের বাসিন্দাদের এমনই অভিযোগ। এর জেরে এই মুহূর্তে কয়েকশো বিঘা জমি, রাস্তা ও তিনটি বাড়়ি জলমগ্ন বলে জানা গিয়েছে।
গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ (খাদ্য) ইজরাহুল ইসলাম মণ্ডল জানান, অমরপুরের তপন বাগদি, সিদ্ধেশ্বর বাগদি, মন্টু বাগদিদের বাড়ি এই মুহূর্তে জলের তলায়। তাঁরা জানান, বাড়ি ছেড়ে এখন স্থানীয় একটি স্কুলে বাস করতে হচ্ছে তাঁদের।
অথচ মাত্র দু’বছর আগেই দামোদর লাগোয়া অমরপুরে পাড় বাঁধানো হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই কাজে দু’কোটি ৬২ লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই বাঁধের পাথর সব জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে নবখণ্ড ও অমরপুর, দুই গ্রামেরই রাস্তা, বহু বিঘে খেতজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। কেন এমন হাল? ইজরাহুলের অভিযোগ, ‘‘দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থা অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় এই হাল হয়েছে। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানাব।’’
এই দু’টি গ্রামের মাঝে রয়েছে বামুনাড়াগ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা, তথা তৃণমূল নেতা শেখ হাসিবুলের অভিযোগ, ‘‘রাস্তা জলমগ্ন হয়ে মনে হচ্ছে পুকুর।’’ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ফি দিন রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত বালি বোঝাই করে বালির ট্রাক যাতায়াত করায় রাস্তার হাল অত্যন্ত খারাপ।
রাস্তার এই হালের জন্য সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। গলসি ১ ব্লকের জেলাপরিষদ কর্মাধ্যক্ষ পরেশ পালের দাবি, ‘‘বৌদি মারা গিয়েছেন। রাস্তা এত খারাপ, যেতেও পারলাম না।’’ তবে বিডিও (গলসি ১) তারকনাথ দাস বলেন, ‘‘ব্লক থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। সেচ দফতরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। জমি ও ঘরবাড়ি ক্ষতিপূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলে আবেদন করব।’’ এ দিন এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিধায়ক অলোক মাঝি। তাঁর আশ্বাস, জেলা পরিষদে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহযোগিতা করার জন্য আবেদন করবেন।