প্রতীকী ছবি।
বিজেপি কর্মীর সঙ্গে মেলামেশার অভিযোগে এক যুবককে বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে গুসকরা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলুটিয়া এলাকার ঘটনা। অভিযোগ নিয়ে চাপানউতোর দেখা দিয়েছে তৃণমূলেও। এক নেতার দাবি, এর সঙ্গে দলের যোগ নেই। আর এক স্থানীয় নেত্রী কার্যত মেনে নিয়েছেন, এক জন তাঁর কাছে ভুল স্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়েছিল। তবে কোনও অভিযোগ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আলুটিয়ার বাসিন্দা বছর তেইশের অসীম মাজি একটি মিলের গাড়ি চালান। শনিবার বিকেলে এক বন্ধুর সঙ্গে পাড়ার দোকানে চপ খেতে দেখা যায় তাঁকে। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এলাকারই জনা চারেক যুবক তাঁর বাড়ি গিয়ে অসীমের খোঁজ করেন। অভিযোগ, ওই যুবকের মা ঝর্ণা মাজি বেরিয়ে এলে কেন ছেলে প্রতিবেশি বিজেপি কর্মীর সঙ্গে মেলামেশা করছে জানতে চাওয়া হয়। কথা কাটাকাটি বাধলে অসীমকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।
অসীমের দাবি, ‘‘পাশের বাড়ির সাহেব রজকের সঙ্গে ছোট থেকে পড়াশোনা করেছি, মেলামেশা করেছি। এখন ওর সঙ্গে চপ খেয়েছি বলে চার জন এসে বলছে, ওর সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না। কেন জিজ্ঞাসা করেতেই মারধর করে ওরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি কখনও রাজনীতি করি নি। তবু বিজেপির হয়ে প্রচার করছি বলে দাগিয়ে দিচ্ছে ওরা।’’ ঝর্নাদেবীরও অভিযোগ, ‘‘পাড়ার একটা ছেলে আমার ছেলের বন্ধু। সে বিজেপি করতে পারে। আমার ছেলে তো কোনও দল করে না। শুধু ওর সঙ্গে মিশেছে বলে বাড়ি এসে মারধর করে গেল!’’ পরে পাড়ার লোকজন জড়ো হয়ে গেলে ওরা পালিয়ে যায়, দাবি তাঁর। বিষয়টি রাতেই এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব এবং পুলিশকে জানান তাঁরা।
রবিবার সকালে গুসকরা পুরসভার তৃণমূলের বিদায়ী উপপুরপ্রধান চাঁদনিহারা মুন্সি ওই বাড়িতে যান। তাঁর দাবি, ‘‘এ সব করা ঠিক হয়নি। যে ছেলেটিকে মারধর করা হয়েছে তাঁর মা তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। যাঁরা গিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে এক জন আমার কাছে ভুল স্বীকার করেছে।’’ যদিও তৃণমূলের গুসকরা শহরের সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এটা দুই পাড়ার ছেলেদের গোলমাল। মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। এর সঙ্গে রাজনীতিরও সম্পর্ক নেই।’’ এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তা দেখারও আশ্বাস দেন তিনি।
বিজেপির গুসকরা নগরের সাধারণ সম্পাদক দীপক ঢালির দাবি, ‘‘তৃণমূলের লোকজন রাজনীতির সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ককে মিশিয়ে ফেলে সাধারণ মানুষের উপরে অত্যাচার করছে। এতে সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে দিকে নজর দেওয়া উচিত।’’