তৃণমূলের অফিসে বিক্ষোভ

মাঝেরগ্রামে দুই নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নালিশ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন সন্ধ্যা নামতেই মাঝেরগ্রামে তৃণমূল কার্যালয়ে এলাকার বেশ কিছু মানুষ জড়ো হন। তাঁদের একটি বড় অংশে ছিলেন মহিলারা। তখন কার্যালয়ে হাজির ছিলেন পঞ্চায়েতের বর্তমান উপপ্রধান সুমন্ত রায় ও প্রাক্তন উপপ্রধান অমরেশ দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩০
Share:

দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূলের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন এক দল গ্রামবাসী। মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন ও বর্তমান উপপ্রধান নানা প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার নাম করে এলাকার লোকজনের কাছে টাকা আদায় করেছেন বলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। সোমবার সন্ধ্যায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ পৌঁছয়। শেষমেশ ওই দুই নেতা টাকা ফেরতের ব্যাপারে মুচলেকা দিয়েছেন বলে ওই গ্রামবাসীদের দাবি। অভিযুক্ত নেতারা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন সন্ধ্যা নামতেই মাঝেরগ্রামে তৃণমূল কার্যালয়ে এলাকার বেশ কিছু মানুষ জড়ো হন। তাঁদের একটি বড় অংশে ছিলেন মহিলারা। তখন কার্যালয়ে হাজির ছিলেন পঞ্চায়েতের বর্তমান উপপ্রধান সুমন্ত রায় ও প্রাক্তন উপপ্রধান অমরেশ দাস। তাঁদের দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই বাসিন্দারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, কখনও আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়া, কখনও একশো দিনের কাজ, আবার কখনও খাস জমির লোভ দেখিয়ে এলাকার মানুষজনের কাছে টাকা নিয়েছেন ওই দুই নেতা। দু’জনের কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানান ওই বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রথমে দুই নেতা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে ক্ষোভ কমেনি। বিক্ষোভের খবর পৌঁছয় মন্তেশ্বর থানায়। পুলিশ পৌঁছলে তাদের সামনেই দুই নেতার কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানাতে থাকেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, কে কত টাকা দিয়েছেন, সেই তালিকা তৈরি করা হয়। এর পরে দুই নেতা টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে এক মাসের মধ্যে তা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে মুচলেকা দিয়েছেন বলে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমন্তবাবু আগে দলের অঞ্চল সভাপতিও ছিলেন। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, দলের নাম করে নানা দুর্নীতি করেছেন তিনি। মাঝেরগ্রামের বাসিন্দা সঞ্জু সাঁতরার অভিযোগ, ‘‘মাস কয়েক আগে সুমন্তবাবু জানান, ঘর পেতে গেলে আগে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। আমার মতো অনেকেই ওঁকে টাকা দেন। তার পরে ঘর তৈরির জন্য সরকারি অর্থ পাওয়া যায়। দুর্নীতি পরায়ণ এই নেতার শাস্তি চাই।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, বছরখানেক আগে এক সঙ্গে সাত জন অঞ্চল সভাপতিকে পদ থেকে সরানো হয়। তার মধ্যে ছিলেন সুমন্তবাবুও। তবে এলাকার এক জনপ্রতিনিধির চাপে এ বার তাঁকে উপপ্রধান করা হয়। দুই নেতার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের ক্ষোভের কথা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও পৌঁছেছে বলে শাসকদলের একটি সূত্রের দাবি।

সুমন্তবাবু অবশ্য মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা যা বলার বলবেন।’’ অমরেশবাবুর সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও। তৃণমূলের মন্তেশ্বর ব্লক সভাপতি আজিজুল হক বলেন, ‘‘দল কোনও দুর্নীতি সমর্থন করে না। ব্যক্তিগত ভাবে কেউ খারাপ কাজ করলে তাঁকে তার ফল ভুগতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বিশদে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন