ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। ছাতাডাঙালে। নিজস্ব চিত্র।
ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার কর্মী এবং তাঁর মা-কে মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনির ছাতাডাঙালের ঘটনা। ঘটনার পরে, এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারাবনি থানার পুলিশ। প্রহৃতদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছে তারা। আকবর আলম-সহ একাধিক তৃণমূল সদস্যের বিরুদ্ধে বারাবনি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি।
ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার বারাবনি মণ্ডল সভাপতি বাপি প্রধান বারাবনি থানায় লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি পরিচিত এক জনের সঙ্গে বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এমন সময় প্রায় কুড়ি জনের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির বাইরে বার করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। বাপির চিৎকার শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন বাপির মা ষাটোর্ধ্ব মিনা প্রধান। তিনি বাধা দিলে, বাপি এবং মিনা দু’জনকেই বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বাপির অভিযোগ, “হামলার নেতৃত্বে ছিলেন এলাকার পরিচিত তৃণমূল নেতা আকবর আলম। অন্যেরা তাঁরই সঙ্গী।” যদিও,অভিযুক্ত আকবরের প্রতিক্রিয়া, “সকালে পানুড়িয়া বাজারে ছিলাম। সেখানে বাপি আমাকে গালাগালি করেন। তার পরে, আমি কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে ঘটনার কৈফিয়ৎ চাইতে ওঁর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তখন উনি আমার উপরে চড়াও হলে, আমিও আত্মরক্ষার্থে হাত চালাতে বাধ্য হই।”
ঘটনাস্থলে যায় বারাবনি থানার পুলিশ। বাহিনী নিয়ে পৌঁছন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (হিরাপুর) প্রতীক রাই। তবে পুলিশ আসার আগে ‘হামলাকারী’রা এলাকা ছেড়ে পালায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ বাপি এবং মিনাকে বারাবনির কেলেজোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করায়। বাপির অভিযোগ, “এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত আমি। তাই এই হামলা। বিধানসভা ভোটের পরে প্রায় দু’মাস বাড়ি ছাড়া ছিলাম।” বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, “বিধানসভা ভোটের সময় থেকে বারাবনিতে দলের নেতা-কর্মীদের মারধর করছে তৃণমূল। মঙ্গলবারও একই ঘটনা ঘটেছে।”
যদিও এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “এক বিজেপি কর্মীর উপরে হামলার খবর পেয়েছি। তবে এই ঘটনার সঙ্গে তণমূলের কোনও যোগ নেই। এটা কোনও ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত ঝামেলা বলে জানতে পেরেছি। পুলিশকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি।” পুলিশ জানিয়েছে, মারধরের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।