সিভিক ভলান্টিয়ারের দাপট

ছুতো পেলেই হেনস্থা, দাবি চালকদের

তল্লাশির নামে হেনস্থা, অহেতুক রাস্তা আটকানো, গালিগালাজ— ছুতো পেলেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ হেনস্থা করেন বলে দুর্গাপুরে অভিযোগ উঠেছে বারবার।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৬
Share:

তল্লাশির নামে হেনস্থা, অহেতুক রাস্তা আটকানো, গালিগালাজ— ছুতো পেলেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ হেনস্থা করেন বলে দুর্গাপুরে অভিযোগ উঠেছে বারবার। প্রকাশ্য রাস্তায় এক যুবককে হেলমেট দিয়ে বেধড়ক মারছেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার, বুধবার বিকেল থেকে এমন একটি ভিডিও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট মারফত ছড়িয়ে পড়তেই এ নিয়ে আরও সরব হয়েছেন শহরবাসী।

Advertisement

গাঁধী মোড়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ার এক যুবককে মারধর ও গালিগালাজ করছেন, দাঁড়িয়ে দেখছেন অন্য সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক পুলিশকর্মী— ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে এমন দৃশ্য। কী ভাবে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার এই কাণ্ড ঘটাতে পারেন, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ঘটনার নিন্দা করে পুলিশকে তদন্ত করতে বলেছেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২০১২ সালের ১ জানুয়ারি পৃথক ট্রাফিক পরিকাঠামোয় কাজ শুরু করে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটে। পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি প্রায় পাঁচশো সিভিক ভলান্টিয়ার ট্রাফিক সামলানোর কাজ করেন। তাঁদের অনেকেই কাজ করতে গিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ করেন বলে অভিযোগ দুর্গাপুরের অনেক মোটরবাইক ও গাড়ি চালকের।

Advertisement

২০১২-র ১ সেপ্টেম্বর সেপকো এলাকায় কাজ করতে আসা মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা তিন নির্মাণকর্মীকে দুষ্কৃতী সন্দেহে তাড়া করে পুলিশ। উত্তম মাল (৩৩) নামে এক জন ধরা পড়ে যান। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় দুর্গাপুর হাসপাতাল থেকে পুলিশ বহরমপুর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। সেক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছিল দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। পরের বছর জুলাইয়ে। দুর্গাপুরের আই সেক্টরের কাছে রাস্তায় মোটরবাইক আরোহী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার এক কর্মী ও তাঁর দুই সঙ্গীকে আটকে দুর্ব্যবহার ও টাকা চেয়ে না পেয়ে নর্দমায় ফেলে মারধরের অভিযোগে দুই সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতারও করা হয়। সেই বছরেই বেনাচিতি বাজারে গাড়ি পরীক্ষার নামে মোটরবাইক আরোহীদের হেনস্থার অভিযোগ ওঠে এক পুলিশ আধিকারিক ও তাঁর সঙ্গী সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা থানায় বিক্ষোভ দেখান।

শহরবাসীর অনেকেরই অভিযোগ, সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের এমন আচরণের শিকার অনেকেই। ঝামেলা এড়াতে অনেকে লিখিত অভিযোগ না করায় সব সময় তা সামনে আসে না। জাতীয় সড়কে গাড়ি আটকে কিছু সিভিক ভলান্টিয়ারের টাকা চাওয়ার দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায় বলেও অভিযোগ। কিছু সহকর্মীর এমন আচরণে বিরক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁদের এক জন বলেন, “কয়েক জনের খারাপ কাজের জন্য আমাদের সবার বদনাম হচ্ছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন