এসডিপিও-র নাম করে টাকা নেওয়া, ধৃত

নাদনঘাট থানার পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যে, অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে তাপসবাবুর মোবাইলে। সেখানেই অচেনা গলায় কখনও ‘প্রিয়ব্রত রায় বলছি’, কখনও বা ‘এসডিপিও বলছি’ বলা হয়। সঙ্গে বলা হয়, চাকরি পাইয়ে দেওয়া হবে, পিনাকী তাঁর ‘কাছের লোক’ ইত্যাদি।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

টাকাটা ওকে দিয়ে দাও। স্বয়ং পুলিশকর্তার কাছে এমন নির্দেশ পেয়ে টাকা দিয়েও দিয়েছিলেন যুবক। যদি চাকরিটা হয়, এই ভেবে। কিন্তু তদন্তে জানা গেল, ফোনটা পুলিশকর্তা করেননি। অন্য এক জন কর্তার নাম ভাঁড়িয়ে প্রতারণা করেছেন। পূর্বস্থলীর নাদনঘাটে এমনই প্রতারণার অভিযোগ শুক্রবার পিনাকী শীল নামে এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের বাড়ি, নাদনঘাটে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, নাদনঘাটের বাসিন্দা তাপস দাস নামে এক গাড়ির চালকের সঙ্গে আলাপ হয় পিনাকীর। কথায় কথায় পিনাকী নিজেকে এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায়ের ‘কাছের লোক’ বলে দাবি করেন। শুধু তাই নয়, তাপসবাবুকে এসডিপিও-র ‘গাড়ির চালকে’র চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথাও পিনাকী জানান বলে অভিযোগ। তবে তার জন্য পিনাকী দাবি করেন, কয়েক হাজার টাকা। কয়েক দফায় মোট ৩০ হাজার টাকা অভিযুক্তকে দিয়েছেন বলেও তাপসবাবুর দাবি।

নাদনঘাট থানার পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যে, অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে তাপসবাবুর মোবাইলে। সেখানেই অচেনা গলায় কখনও ‘প্রিয়ব্রত রায় বলছি’, কখনও বা ‘এসডিপিও বলছি’ বলা হয়। সঙ্গে বলা হয়, চাকরি পাইয়ে দেওয়া হবে, পিনাকী তাঁর ‘কাছের লোক’ ইত্যাদি। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ফোনগুলি আসলে অন্য গলা করে পিনাকীই করছিল, তাপসবাবুর বিশ্বাস অর্জনের জন্য।

Advertisement

পরে পিনাকীর কথা মতো প্রশিক্ষণ নিতে বর্ধমানে পুলিশ লাইনে পৌঁছে যান তাপসবাবু। কিন্তু সেখানে ঢোকার মুহূর্তে ফের প্রিয়ব্রতবাবুর নাম করে তাপসবাবুর কাছে মোবাইলে ফোন আসে। সেখানে বলা হয়, ‘তুমি তো খুবই ভাল চালক, দরকার নেই প্রশিক্ষণের। তুমি বরং আরও আট হাজার টাকা পিনাকীকে দাও।’

তাপসবাবুর অভিযোগ, এর পরে এলাকায় ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে পিনাকীর সঙ্গে দেখা হলেও চাকরির বিষয়ে কথা হয়নি। এর পরেই সন্দেহ হয় তাপসবাবুর। তিনি সটান দেখা করেন এসডিপিও-র সঙ্গে। এস়ডিপিও প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘ওই যুবক আমার কাছে এসে বলেন, আমি তো চাকরি পেলাম না। আপনিই তো ফোনে ওকে টাকা দিতে বলেছিলেন না। আমি বুঝতে পারি, কিছু গোলমাল হয়েছে। বিষয়টি নাদনঘাটের ওসি-কে দেখতে বলি। তার পরেই প্রতারণার কথা সামনে আসে।’’

শুক্রবার নাদনঘাট থানার পুলিশ বাড়ি থেকে পিনাকীকে গ্রেফতার করে। শনিবার পিনাকীকে কালনা আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তদন্তাকারীদের দাবি, এর আগেও বেশ কয়েক জন যুবককে একই ভাবে প্রতারণা করে প্রায় লাখ চারেক টাকা হাতিয়েছেন অভিযুক্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন