ভুয়ো নথিতে ভাতার টাকা তোলার নালিশ

দিব্যি সংসার করছেন, অথচ অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে বিধবা ভাতার টাকা। আবার বয়স ভাঁড়িয়ে কেউ তুলে নিচ্ছিলেন বার্ধক্য ভাতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০০:২৮
Share:

দিব্যি সংসার করছেন, অথচ অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে বিধবা ভাতার টাকা। আবার বয়স ভাঁড়িয়ে কেউ তুলে নিচ্ছিলেন বার্ধক্য ভাতা।

Advertisement

বছরের পর বছর এমন কারবার চললেও টের পাননি কর্তারা। শেষে তথ্য জানার অধিকারে পাঠানো একটা চিঠি টনক নড়িয়ে দেয় কালনা পুরসভার। তদন্তে জানা যায়, কালনা শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪ জন বাসিন্দা ভুয়ো নথিপত্র জমা দিয়ে কেউ পাঁচ বছর, কেউ তিন বছর ধরে বিধবা এবং বার্ধক্য ভাতার টাকা আত্মসাৎ করছিলেন। অভিযুক্ত ১৪ জনকে শুনানিতে ডাকা হলেও তারা হাজির হননি বলেও পুরসভার দাবি। জানা গিয়েছে, ওই ১৪ জনকে দ্বিতীয়বার শুনানিতে ডাকা হয়েছে শুক্রবার। সেখানেও তাঁরা হাজির না হলে থানায় অভিযোগ করা হবে।

কালনার ১৮টি ওয়ার্ডে বিধবা, বার্ধক্য এবং অক্ষম ভাতা পান ২৮৫০ জন। নিয়ম বলে, ৬০ বছর বয়স হলে বার্ধক্য ভাতা আর ৪২ পেরনোর পরে বিধবা ভাতা মেলে। বিধবা ভাতার ক্ষেত্রে মাসে ৬০০ টাকা এবং বার্ধক্য ভাতায় মাসে ৪০০ টাকা পাওয়া যায়। এই টাকা সরকারের তরফে পুরসভার অ্যাকাউন্টে জমা হয়। সেখান থেকে তা যায় প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে।

Advertisement

সম্প্রতি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভেটেরামহলের বাসিন্দা অনিল বসু তথ্য জানার অধিকারে পুরসভায় একটি চিঠি পাঠান। এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দার নাম জানিয়ে তিনি জানতে চান তাঁরা বিধবা বা বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার যোগ্য কি না। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুরসভা। ১১ জনের কমিটি গড়ে নথিপত্র খতিয়ে দেখা যায় ওই ওয়ার্ডের ১৪ জন ভুয়ো নথি জমা দিয়ে ভাতার টাকা পাচ্ছেন। পুরসভার তরফে পরিবারগুলিকে নোটিস পাঠিয়ে ১৪ মার্চ হাজিরা দিতে বলা হয়। তবে তাঁরা কেউই আসেননি বলে পুরসভার দাবি।

পুরসভার হিসাবে, জগদীশ লোহার ওরফে লেজার বয়স বর্তমানে ৫০। অথচ কয়েক বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পান তিনি। তাঁর বাড়িতে গেলে অবশ্য স্ত্রী টুকুন লোহার দাবি করেন, ‘‘স্বামী রান্নার কাজ করতে বাইরে গিয়েছেন। তিনিই বলতে পারবেন বিষয়টা।’’ কিছুটা দূরেই থাকেন ঝুমা কর্মকার এবং রমা কর্মকার নামে দুই বোন। পুরসভার দাবি, বিধবা না হওয়া সত্ত্বেও ভাতার টাকা তুলছেন তাঁরা। ঝুমাদেবীও বলেন, ‘‘আমি এবং বোন বিবাহিত। বার্ধক্য ভাতার বিষয়টি মা বলেতে পারবেন।’’

বাকি ওয়ার্ডেও এ ধরণের দুর্নীতি চলছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুরসভা। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ জানান, চলতি বোর্ড নতুন করে বিধবা, বার্ধক্য বা অক্ষম ভাতার তালিকা তৈরি করেনি। আগে থেকে যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরাই টাকা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা চায় যাঁদের প্রয়োজন তাঁরাই যেমন পরিষেবা পান। কারচুপি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিললে পুলিশকে জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন