Aadhar Card Problem

আধার কার্ড নেই, সাহায্য বন্ধে অসহায় বৃদ্ধা

কাঁকসা ব্লকের বনকাটি পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর গ্রামের বাদ্যকর পাড়ায় বসবাস করেন অবলা। বয়স ৭০-র কাছাকাছি। লাঠি ধরে হাঁটাচলা করেন।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫ ০৮:৩৩
Share:

মেয়ে, নাতিকে নিয়ে এখানেই থাকেন অবলা বাদ্যকর। নিজস্ব চিত্র।

বসবাস করেন গ্রামের একটি ভাঙাচোরা ক্লাবঘরে। কোনও দিন খাবার জোটে তো আবার কোনও দিন অভুক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে হয়। বন্ধ হয়ে গিয়েছে সরকারি ভাতা। মেলে না রেশনের সামগ্রীও। এ ভাবেই দিন কাটছে কাঁকসার রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা অবলা বাদ্যকর ও তাঁর মেয়ে, প্রতিবন্ধী নাতির। আধার কার্ড না থাকায় কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা মিলছে না। সমস্যা দূর করতে বনকাটি পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু এখনও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। যদিও পঞ্চায়েতের দাবি, সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

কাঁকসা ব্লকের বনকাটি পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর গ্রামের বাদ্যকর পাড়ায় বসবাস করেন অবলা। বয়স ৭০-র কাছাকাছি। লাঠি ধরে হাঁটাচলা করেন। তিন মেয়ের মধ্যে দু’জন মারা গিয়েছেন। আর এক মেয়ে এবং মৃত এক মেয়ের ছেলে, বছর উনিশের নাতিকে নিয়েই তিন জনের সংসার অবলার। বাসিন্দারা জানান, এক সময়ে ভাল ঘরে বসবাসকরতেন অবলা। কিন্তু প্রায় তিন বছর আগে ঝড়ে সেই বাড়ি ভেঙে পড়ে। সংসারে উপার্জনকারী বলতে তেমন কেউ নেই। ফলে, সেই বাড়ি আর মেরামত করা যায়নি। গ্রামের একটি ক্লাবঘরে তিন জনের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় বলে জানান বাসিন্দারা। কিন্তু সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আধার কার্ড। বাসিন্দারা জানান, তাঁদের আধার কার্ড না থাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে সরকারি সাহায্যও। রেশন থেকে তো সামগ্রী পাচ্ছেনই না। অবলার বন্ধ হয়ে গিয়েছে বার্ধক্য ভাতাও। এলাকাবাসী গোবিন্দ বাদ্যকর জানান, মাঝেমধ্যে চেয়েচিন্তে চাল, ডাল জোগাড় করে খাবারের ব্যবস্থা করেন। অনেক সময়ে গ্রামের কেউ কেউ খাবার দেন। কিন্তু এ ভাবে কত দিন, প্রশ্ন সকলের।

অবলার রয়েছে ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, ব্যাঙ্কের পাস বই। নেই শুধু আধার কার্ড। অবলা জানান, কখন যে আধার কার্ড হয়েছে, তা তিনি জানতেন না। ফলে, সেই কার্ড আর করা হয়নি তাঁদের। তিনি বলেন, “আধার কার্ড না থাকায় আমি রেশন পাচ্ছি না। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বার্ধক্য ভাতা। কোনও দিন ভিক্ষা করতে না পারলে, সে দিন আর খাবার জোটে না।”

দেখা গেল, একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে রয়েছেন তিন জন। ওই বাড়ির চারদিকে ফাটল ধরেছে। ঝোপ-জঙ্গলে ভরা বাড়ির চারপাশ। বৃষ্টি হলে জল ঘরের ভিতরে পড়ছে। তারই মধ্যে বসবাস তিন জনের।

কেন এত দিনে আধার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি? পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সোমনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাফাই, যখন এলাকায় এলাকায় আধার কার্ড তৈরি করা হচ্ছিল, তখন কোনও ভাবে তাঁরা সেটি করেননি। তা ছাড়া, আধার কার্ড তৈরি করতে গেলে একটি ফোনের প্রয়োজন। ওই পরিবারের সেটি নেই। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পঞ্চায়েত থেকে সাহায্য করা হয়। আধার কার্ডটি যাতে দ্রুত তৈরি করে দেওয়া যায়, সে বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।”

আপাতত আশা নিয়ে দিন কাটছে অবলাদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন