পোস্ট অফিসের বাইরের ছাতিম গাছের তলায় বসে কান্নাকাটি করছিলেন বছর পঁয়ষট্টির এক প্রৌঢ়। সামনেই মেয়ের বিয়ে। কিন্তু প্রায় তিন মাস আগে মেয়াদ পূর্ণ হলেও জমা রাখা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। কারণ, পোস্ট অফিসের লিঙ্ক নেই।
মাসিক সুদ প্রকল্পে পোস্ট অফিসে টাকা রেখেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মী অমলকুমার মুখোপাধ্যায়, কান্তি মণ্ডলরা। অভিযোগ, লিঙ্কের সমস্যার কারণে প্রায়ই টাকা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় তাঁদের।
শুধু লিঙ্ক, রয়েছে আরও নানা সমস্যা। বাসিন্দারা জানান, রেলের একটি পুরনো আবাসনেই দীর্ঘদিন ধরে অন্ডালের প্রধান ডাকঘরটি চলছে। জায়গা ছোট, নেই জলের ব্যবস্থা, গ্রাহকদের বসারও নির্দিষ্ট জায়গা নেই। অগত্যা বসে থাকতে হয় ছাতিম তলাতেই। এখানেই শেষ নয়। গ্রাহকদের অভিযোগ, সময়ের আগে চলে যান পোস্টমাস্টার। দুর্ব্যবহারও করেন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি মানতে চাননি পোস্টমাস্টার নেপালচন্দ্র মালি। তিনি জানান, গ্রাহকদের সমস্যার কথা তিনি জানেন। সেই নিয়ে বেশ কয়েকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে উখড়া পোস্ট অফিস নিয়েও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর খানেক ধরে পোস্ট অফিসের জেনারেটারটি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। কোনও কারণে লোডশেডিং হলে প্রায় সব কাজই বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়তে হয় গ্রাহকদের। পোস্ট অফিসের পাশে থাকা নর্দমাটিও নিয়মিত সাফাই হয় না। দুর্গন্ধের জেরে নাজেহাল হতে হয় গ্রাহকদের। অভিযোগ রয়েছে দালাল চক্র নিয়েও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সময়ের আগেই পোস্ট অফিসের মূল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরে সব কাজই করাতে হয় দালালদের মাধ্যমে। বারবার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও ভারপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার কিছু বলতে চাননি।
রানিগঞ্জ ডাকঘরের হেড পোস্টমাস্টার স্বামীনাথ সিংহ জানান, অন্ডালে লিঙ্কের সমস্যা বেশ কিছু দিন ধরে চলছে। সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। অন্ডাল পোস্ট অফিসের জেনারেটারের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি। তবে দালাল চক্র নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ পাননি বলে জানান স্বামীনাথবাবু। লিখিত অবিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।