এক দিকে বাড়তি খরচে রাশ টানা, অন্য দিকে আয়ের নতুন রাস্তা তৈরি— বিপুল ব্যয় সামাল দিতে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য এই পন্থা নিতে চাইছে আসানসোল পুরসভা। সে জন্য পুরসভার নিজস্ব প্যাকেজ ওয়াটার প্ল্যান্ট’ তৈরি থেকে শুরু করে নকশা অনুমোদন না করিয়েই গড়া বাড়ির মালিকদের থেকে ফি আদায়, বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানান। পুরসভার বাজেটের পরেই এই সব সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য ঝাঁপানো হবে বলে কর্তারা জানান।
হকারদের দখল থেকে ফুটপাথ মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। সে জন্য হকারদের পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, গির্জা মোড়ের কাছে তৈরি বহুতল হকার্স মার্কেট আকর্ষণীয় করে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হকারদের পুনর্বাসনের পরেও সেখানে বেশ কিছু দোকান অবশিষ্ট থাকবে। তা বিক্রি করে পুরসভার রাজস্ব বাড়ানো হবে।
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ২০০৯-এর আগে পুরসভা থেকে নকশা অনুমোদন না করিয়েই আসানসোল, কুলটি, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ায় বেশ কিছু বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। সেগুলির মালিকদের নকশা অনুমোদনের সুযোগ দেওয়া হবে। প্রতি তলার জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে ফি নেওয়া হবে।
রাজস্ব বাড়ানোর জন্য একটি প্যাকেজ ওয়াটার প্ল্যান্ট বসানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে পুরসভা। বার্নপুরে দামোদর লাগোয়া কালাঝরিয়ায় এই প্ল্যান্ট বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। মেয়র জানান, সেটি রূপায়ণ হলে এক দিকে যেমন শহরবাসী সস্তায় শুদ্ধ জল পাবেন, তেমনই পুরসভার আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
মেয়র পারিষদদের বৈঠকে বিভিন্ন এলাকায় জলের অবৈধ সংযোগ ছিন্ন করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। জল দফতরের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায় জানান, গরমের আগেই সর্বত্র পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের অভিযোগ, পুরসভা পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করে, কিন্তু পাইপ ফুটো করে যথেচ্ছ অবৈধ সংযোগ নেওয়ায় ঘাটতি হচ্ছে। মেয়র পারিষদের দাবি, ইটভাটা, কারখানা-সহ নানা বাণিজ্যিক সংস্থায় অবৈধ জলের সংযোগ নেওয়া হয়েছে। পুরসভাকে নির্দিষ্ট মূল্যে সংযোগ নিতে বলা হয়েছে, জানান পুর কর্তৃপক্ষ।
এর সঙ্গে খরচের বহরও কমানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত কাজে পুরসভার গাড়ি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পুরসভার মূল ভবন ও বিভিন্ন বরো অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহারও সীমিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেয়র বলেন, ‘‘অবাঞ্ছিত খরচ কমিয়ে সেই টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের লক্ষে এগোচ্ছি আমরা।’’ তাঁর দাবি, পুরসভার রাজস্বে ঘাটতি বন্ধ হলে সরকারের তরফে নানা অনুদান মিলবে। বেসরকারি সাহায্যের পথও সুগম হবে।