হাসপাতালের পথে। নিজস্ব চিত্র
‘সার্ভিস রিভলবার’ থেকে মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হলেন এক এএসআই। শনিবার রাতে দুর্গাপুরের বিধাননগরের কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্সের ক্যাম্পাসে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত নাজিমুদ্দিন শেখের (৩৬) বাড়ি বীরভূমের রামপুরহাটে।
পুলিশ জানায়, দুর্গাপুর পুরভোটের জন্য সিধো-কানহু স্টেডিয়ামে রাখা ইভিএম-র নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন দুর্গাপুর থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর নাজিমুদ্দিন। শনিবার সন্ধ্যায় কাজ সেরে ক্যাম্পাসের আবাসনে ফেরেন। সেখানেই থাকেন তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেও। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ পোশাক বদলাতে শোওয়ার ঘরে যান নাজিমুদ্দিন। সেই সময়ই তিনি রিভলবার থেকে মাথার ডান দিকে গুলি চালান তিনি। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা নাজিমুদ্দিনকে মৃত বলে জানান।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের দাবি, মানসিক অবসাদের জেরেই সম্ভবত এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ওই এএসআই। পুলিশ জানায়, কয়েক বছর আগে কম্যান্ডো প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে কোমরে ও পায়ে চোট পেয়েছিলেন নাজিমুদ্দিন। চেন্নাই ও ভেলোরে চিকিৎসা করিয়েও তা সারেনি। নাজিমুদ্দিনের স্ত্রী’র ভাই আবদুল মান্নানও শনিবার রাতে দিদির কাছেই ছিলেন। তাঁর দাবি, ‘‘উনি মানসিক ভাবে খুবই ভেঙে পড়েছিলেন। সুস্থ হবেন, এই আশাটাই যেন হারিয়ে ফেলেছিলেন।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি অভিষেক মোদিও বলেন, ‘‘চোটের কারণে উনি মানসিক অবসাদে ভুগতেন। সম্ভবত, সেই কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন।’’ নিউটাউনশিপ থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
তবে রিভলবার এএসআই-র সঙ্গে কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন পুলিশ কর্তাদের কেউ কেউ। কমিশনারেটের এক কর্তাই জানান, সাধারণত বাইরে ‘ডিউটি’ পড়লে থানায় ফিরে সার্ভিস রিভলবার জমা দিয়ে বাড়ি ফেরার কথা। তবে সময় ও দূরত্ব বাঁচাতে অনেকেই সেই ‘নিয়ম’ না মেনে রিভলবার বাড়ি নিয়ে যান। শনিবারও ওই এএসআই তেমনটাই করেছিলেন বলে পুলিশ জানায়। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।