প্রচারের শেষ দিন থেকেই রাজনৈতিক দলগুলি তো বটেই পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিল প্রশাসনও।
বৃহস্পতিবার ভোটের দিনের নিরাপত্তা নিয়ে দুটি বৈঠক হয় বর্ধমানে। একটিতে ভোটের পর্যবেক্ষক ও প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বসেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। অন্যটিতে আইজি ও ডিআইজির উপস্থিতিতে জেলা পুলিশ সুপার কুণার অগ্রবাল বিভিন্ন থানার আইসি ও ওসিদের নিয়ে বৈঠক করেন। পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘জেলার চারটি পুরসভার ভোটে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে না। তবে কিছু সংখ্যায় ভিন জেলার পুলিশ মিলবে। প্রতিটি বুথকেই সংবেদনশীল ধরে নিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রেও জানা গিয়েছে, জেলার চারটি পুর এলাকায় প্রায় ১৫০টি বুথে চূড়ান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বৈঠক করা হয়েছে এ দিন।
প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিও। জেলা কংগ্রেসের তরফে প্রাক্তন জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) আজিজুল হক মণ্ডল এসপির কাছে আর্জি জানিয়েছেন, পাশের জেলাগুলি থেকে জেলার চার পুরসভা এলাকায় অনুপ্রবেশ যেন রোখা হয়। এই ব্যবস্থা না করতে পারলে ভোটের দিনে প্রচুর সন্ত্রাস হবে বলে তাঁদের দাবি। এর পাশাপাশি যে পুর এলাকায় ভোট হচ্ছে, সেখানে বিভিন্ন দলের রাজনৈতির কর্মীরা যেন সংশ্লিষ্ট পুরসভায় ভোটের দিন ঢুকে না পড়েন, তা দেখতে তাঁরা পুলিশকে অনুরোধ করেছেন। মেমারির দুই কংগ্রেস প্রার্থী ৬ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আশিস দত্ত ও শ্যামল সরকারের দাবি, ‘‘মেমারির নির্বাচনে সন্ত্রাস হবে বলেই ধরে নিচ্ছি আমরা। পুলিশের ওপর আমাদের ভরসা নেই। পুলিশই তৃণমূলের হয়ে ভোটের দিন বুথে বুথে গোলমাল পাকাবে বলেই আমাদের আশঙ্কা।” কংগ্রেসের মেমারি ভোট পর্যবেক্ষক সেলিম মোল্লাও বলেন, “কর্মীদের বুথে বুথে সজাগ থেকে প্রতিরোধ করতে বলেছি। মেমারির কয়েকটি ওয়ার্ডে আমাদের জয়ী হওয়ার আশা রয়েছে। ভোট যাতে ঠিকমতো হয়, সে জন্য পুলিশের সহযোগিতাও চেয়েছি।”
ভোটে সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছে সিপিএমও। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সনত্ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মেমারিতে ভোট হলেও জামালপুর, বর্ধমান, খণ্ডঘোষ প্রভৃতি এলাকা থেকে বহিরাগতদের নিয়ে বুথে বুথে সন্ত্রাস চালাতে পারে তৃণমূল।” বিজেপির মেমারির পর্যবেক্ষক ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যেরও দাবি, “তৃণমূলের দাপাদাপি রুখতে পুলিশ কিছু করবে বলে মনে হয়না। ভোটারদের উপরই আমাদের ভরসা রয়েছে। আশা করি তাঁরাই গণপ্রতিরোধ করে নিজেদের ভোট নিজেরা দেবেন।”
তবে তৃণমূলের ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা উজ্জ্বল প্রামাণিক বিরোধীদের সন্ত্রাসের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “পুলিশের সহযোগিতায় মেমারিতে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। ভোটের দিন আমাদের দলের কর্মী সমর্থকেরাই ভোটের কাজ করবেন। ভোট করাতে আমাদের বাইরের লোকের দরকার নেই। তাই কেউ আসবেও না। বিরোধীরা অহেতুক সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছে।’’