চুরমার: পানাগড়ে দুর্ঘটনার কবলে স্কুলবাস এবং গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
উড়ালপুলে কাজ চলার জেরে অর্ধেক রাস্তা বন্ধ। কিন্তু দ্রুত গতিতে ছুটে আসা গাড়ি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে, বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে পানাগড় রেল উড়ালপুলের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে। শনিবার সকালে একটি গাড়ির সঙ্গে স্কুলবাসের ধাক্কায় জনা দশেক পড়ুয়া ও ছয় যাত্রী জখম হলেন। যান নিয়ন্ত্রণের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কলকাতার নাগেরবাজার থেকে একটি পরিবার এ দিন গাড়ি করে তারাপীঠ যাচ্ছিল। রেল উড়ালপুলের কিছুটা আগে থেকে জাতীয় সড়কে দুর্গাপুরের দিকে যাওয়ার লেনটি বন্ধ। অন্য দিকের লেন ধরেই দু’দিকের গা়ড়ি যাতায়াত করছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এ দিন তারাপীঠগামী গা়ড়িটি লেন পাল্টানোর পরেও দ্রুত গতিতে ছুটছিল। উল্টো দিক থেকে আসছিল পানাগড় রামকৃষ্ণ আশ্রম বিদ্যাপীঠের একটি স্কুলবাস। বুদবুদের ধরলা মোড়ের কাছে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটিতে ধাক্কা মারে। আশপাশের বাসিন্দারা বাসের পড়ুয়া ও গাড়ির যাত্রীদের উদ্ধার করে রাজবাঁধে এক বেসরকারি হাসপাতালে পাঠান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন ছাত্র ও গাড়ির ছয় যাত্রী ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ির চালক-সহ দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পড়ুয়াদের চোট গুরুতর না হলেও তারা আতঙ্কে ভুগছে বলে জানান অভিভাবকেরা। স্কুলের শিক্ষক মহাদেব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে পড়ুয়ারা।’’ গাড়িটির যাত্রী লোপামুদ্রা চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘চালককে বারবার গতি কমাতে বললেও তিনি শোনেননি।’’
ঘটনার পরেই আশপাশের বাসিন্দারা আধ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেন। তাঁদের দাবি, গত চার মাসে রাস্তার এই অংশে এ নিয়ে পাঁচটি দুর্ঘটনা ঘটল। রাস্তার একাংশ বন্ধ রাখা হলেও কোনও সতর্কতামূলক বোর্ড নেই। ফলে, চওড়া জাতীয় সড়ক ধরে দ্রুত আসা গাড়িগুলির চালকেরা অনেক সময়েই বিভ্রান্ত হন। যান নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও ট্র্যাফিক পোস্ট নেই। বসানো হয়নি স্পিড ব্রেকারও। স্থানীয় মৃন্ময় শ্যাম, তুহিন মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ বা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’’
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই জায়গায় যান নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, রেল উড়ালপুলের কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। রাস্তা খুলে দেওয়া হলে সমস্যা কমবে বলে তাঁদের আশা।