নর্দমায় রিকশা, তলিয়ে গেল শিশু

রবিবার ওই ঘটনার পরেই হাটন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বড় নর্দমাটি সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছে। যার ফলে, খানিক বৃষ্টি হলেই জল উপচে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

তলিয়ে যাওয়া শিশু অতিকা নাজ। নিজস্ব চিত্র

বিকেলে বৃষ্টি নেমেছিল মুষলধারায়। তার মধ্যেই তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে রিকশায় চড়ে আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন দম্পতি। জল জমে একাকার হয়ে গিয়েছিল রাস্তা ও নর্দমা। চালক ফারাক করতে না পারায় উল্টে যায় রিকশাটি। আসানসোলে ওই দম্পতি ও রিকশার চালককে নর্দমা থেকে উদ্ধার করা গেলেও তলিয়ে গিয়েছে শিশুটি।

Advertisement

রবিবার ওই ঘটনার পরেই হাটন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বড় নর্দমাটি সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছে। যার ফলে, খানিক বৃষ্টি হলেই জল উপচে আসে। নর্দমার পাশে রেলিং থাকলেও একটি জায়গা ফাঁকা ছিল। সেখান দিয়েই গলে যায় রিকশাটি। কেন সেখানে রেলিং দেওয়া হয়নি, উঠেছে সে প্রশ্নও। দমকল উদ্ধারকাজে নামলেও রাত পর্যন্ত আতিকা নাজ নামে ওই শিশুর হদিস মেলেনি।

আসানসোল রেলপাড় এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আলমগির একটি মাছের আড়তে কাজ করেন। এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ তিনি স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে রিকশায় চড়ে আর্য সরণিতে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। তাঁর দাবি, বৃষ্টির জেরে তখন হাটন রোড দিয়ে প্রায় কোমর সমান উচ্চতায় জল বইছিল। নর্দমা বা রেলিং ঠাহর করা যাচ্ছিল না।

Advertisement

আলমগিরের কথায়, ‘‘হঠাৎ রিকশা উল্টে যায়। আমরা নর্দমায় গিয়ে পড়ি। লোকজন ছুটে এসে আমাদের টেনে তুললেও মেয়ে হাত ফস্কে চলে যায়।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা নর্দমায় নেমে মেয়েটির খোঁজ শুরু করেন। পৌঁছয় পুলিশ ও দমকল। মিনিট পঁয়তাল্লিশের বৃষ্টির খানিক পরে জলও নেমে যায়। কিন্তু শিশুটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।

শনিবার সকালে কলকাতার তারাতলায় খোলা নর্দমায় পড়ে মৃত্যু হয় দেড় বছরের এক শিশুর। দুর্ঘটনার পরে নর্দমা বিপজ্জনক ভাবে খোলা রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেখানে। একই প্রশ্ন তুলেছেন আসানসোলের হাটন রোডের পাশের বাসিন্দারাও। তাঁদের অভিযোগ, শহরের একটি বড় এলাকার নিকাশির ভরসা প্রায় তিরিশ বছরের পুরনো এই নর্দমা। কিন্তু তা নিয়মিত সংস্কার হয় না।

পুরসভার কর্তাদের কাছে এই অভিযোগের সদুত্তর মেলেনি। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পুরসভার আইন দফতরের বিশেষজ্ঞ রবিউল ইসলামের দাবি, নর্দমার পাশে রেলিং থাকলেও রাস্তার জল বেরনোর জন্য একটি ছোট অংশ ফাঁকা রাখা ছিল। জলে ডুবে থাকায় রিকশা চালক জায়গাটি বুঝতে পারেননি। আসানসোলের মেয়র জিতন্দ্র তিওয়ারি শুধু বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন