আক্রান্ত: এ ভাবেই মারধর করা হয়েছে চিকিৎসককে। নিজস্ব চিত্র
গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসকের উপরে চড়াও হলেন পরিজনেরা। রবিবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথমে বিক্ষোভ, তার পরে ওই চিকিৎসককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
চিকিৎসা নিয়ে ক্ষোভ থাকলে অভিযোগ জানানোর জন্য সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমিশন গড়েছে রাজ্য। কিন্তু, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভাঙচুর বা চিকিৎসকের উপরে চড়াও না হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গুসকরার ঘটনায় ওই চিকিৎসক কোনও অভিযোগ না করলেও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় (সিএমওএইচ) বলেন, “সোমবার ঘটনার তদন্তের পরে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলব।” জেলার এসপি কুণাল অগ্রবালও বলেন, ‘‘প্রয়োজনে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করব।”
সূত্রের খবর, ভাতারের বসতপুর থেকে এ দিন সকালে গলায় খাবার আটকে যাওয়া ৯ মাসের রোহিত বারুইকে গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। কিছু পরে চিকিৎসক দেবজ্যোতি ঘোষ জানান, শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির বাবা জীবন বারুইয়ের অভিযোগ, “বাড়ি চলে যাচ্ছিলাম। কিন্তু রাস্তায় ছেলে গলায় থাকা খাবার তুলে দেয়, প্রস্রাবও করে।’’ তাঁর দাবি, তখন কাছেই এক চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়ে গেলে তিনি জানান, মিনিট ১৫ আগে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আগে নিয়ে এলে বাঁচানো যেত। এর পরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চড়াও হন জনা পঞ্চাশ লোক। বারান্দায় শিশুর দেহ রেখে বিক্ষোভ শুরু হয়। ডিউটি শেষে দেবজ্যোতিবাবু বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। তাঁকে ফোন করে ডাকা হয়। তিনি পৌঁছতেই মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। দেবজ্যোতিবাবুর বক্তব্য, ‘‘শ্বাসনালীতে খাবার আটকে গিয়েছিল শিশুটির। আমাদের কাছে আনার পরে মিনিট দশেক ধরে চেষ্টা করি। কিন্তু আগেই মৃত্যু হয়েছিল।’’ আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধীমান মণ্ডল বলেন, ‘‘শ্বাসনালীতে খাবার আটকে মৃত্যু রুখতে বাসিন্দাদের সচেতনতার প্রয়োজন।’’ সিএমওএইচ প্রণববাবু জানান, ঘটনার পিছনে কারও কোনও উস্কানি রয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে।