দুর্গাপুরে প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা

২৪ ঘণ্টায় চুরি দু’টি আবাসনে

একই দিনে পরপর দু’টি আবাসনে চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত গ্রুপ হাউজিংয়ের বাসিন্দারা। দিন কয়েক আগে একাধিক আবাসনে চুরির চেষ্টার পরে কিছু দিন আগে গণস্বাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপি থানায় জমা দেন বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৬
Share:

লন্ডভন্ড ঘর। নিজস্ব চিত্র

দুপুরের পরে রাতেও। শুক্রবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জোড়া চুরির ঘটনা ঘটল দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার বিধাননগরে। একই দিনে পরপর দু’টি চুরির ঘটনায় এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

ওই এলাকার একটি আবাসনের তিন তলায় থাকেন প্রশান্তকুমার সিংহ ও তাঁর স্ত্রী নীলিমাদেবী। প্রশান্তবাবু রাজবাঁধের একটি কলেজের ও তাঁর স্ত্রী দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। রোজকার মতো শুক্রবার সকালে দু’জনেই বাড়ি তালাবন্ধ করে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে নীলিমাদেবী দেখেন, ঘরের তালা ভাঙা। দরজা খোলা। ঘরের ভিতরে আলমারি ভাঙা, সমস্ত জিনিসপত্র লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে রয়েছে। খোওয়া গিয়েছে সোনার গয়না, নগদ টাকা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নিউটাউনশিপ থানার বিধাননগর ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, দুপুর থেকে ওই এলাকায় একটি দিল্লির নম্বরপ্লেট যুক্ত গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। অথচ তা পুলিশের নজর এড়িয়ে যায়। বাসিন্দাদের অনুমান, সম্ভবত ওই গাড়িতে করেই দুষ্কৃতীরা এসেছিল।

এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবারই রাত ১০টায় অদূরের অন্য একটি আবাসনে ফের চুরি হয়। ওই আবাসনে থাকেন শুভাশিস রায় ও তাঁর স্ত্রী পিঙ্কিদেবী। পারিবারিক কাজে শহরের বাইরে গিয়েছিলেন তাঁরা। রাতে লাগোয়া ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা দেখেন ওই দম্পতির বাড়িতে আলো জ্বলছে। সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন, দরজার তালা ভাঙা। ঘরের ভিতরে আলমারি, খাটের ডিভান ভাঙা। সব জিনিসপত্র লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে রয়েছে। এই খবর পেয়ে শনিবার সকালে তড়িঘড়ি বাড়ি ফেরেন ওই দম্পতি। তাঁদের দাবি, আলমারিতে থাকা নগদ টাকা, সোনার কানের দুল ও বেশ কিছু রুপোর কয়েন নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

একই দিনে পরপর দু’টি আবাসনে চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত গ্রুপ হাউজিংয়ের বাসিন্দারা। দিন কয়েক আগে একাধিক আবাসনে চুরির চেষ্টার পরে কিছু দিন আগে গণস্বাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপি থানায় জমা দেন বাসিন্দারা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা হৃদয় সাঁইয়েরও অভিযোগ, ‘‘কয়েক মাস ধরে একের পরে এক ঘটনায় এই থানা এলাকায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। গ্রুপ হাউসিংয়ের আবাসনগুলিতে অনেকেই দুপুরে থাকেন না। সেই সুযোগ নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশকে আরও তৎপর হতে হবে।’’ ‘দুর্গাপুর গ্রুপ হাউসিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি’র সভাপতি মদন সরকারের ক্ষোভ, ‘‘পুলিশকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য রুখতে এলাকায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর বিষয়েও পুলিশের কাছে আংশিক আর্থিক সহযোগিতা চেয়েও সাড়া মেলেনি।’’ তাঁর দাবি, আবাসনে চুরির পাশাপাশি রাস্তায় বেরিয়ে হার ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্যও বাড়ছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) বিমলকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘সবকটি ঘটনারই তদন্ত চলছে। এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন