যানবাহনে ভিড়, বাজার ফাঁকা 

ইসলামপুরে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে বনধ্‌ ডেকেছিল বিজেপি। গোড়া থেকেই তৃণমূল বিরোধিতা করে তার। বুধবার দু’একটা বিক্ষিপ্ত জায়গা ছাড়া বনধ্‌ তেমন ভাবে প্রভাব ফেলেনি জেলায়। কিছু গোলমাল, অবরোধ হয়েছে তবে রাস্তাঘাটে আর পাঁচটা দিনের মতোই লোকজন দেখা গিয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০৭
Share:

বর্ধমান স্টেশনে যাত্রীদের যাতায়াত। বুধবার। ছবি: উদিত সিংহ ও জাভেদ আরফিন মণ্ডল

ইসলামপুরে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে বনধ্‌ ডেকেছিল বিজেপি। গোড়া থেকেই তৃণমূল বিরোধিতা করে তার। বুধবার দু’একটা বিক্ষিপ্ত জায়গা ছাড়া বনধ্‌ তেমন ভাবে প্রভাব ফেলেনি জেলায়। কিছু গোলমাল, অবরোধ হয়েছে তবে রাস্তাঘাটে আর পাঁচটা দিনের মতোই লোকজন দেখা গিয়েছে।

Advertisement

ট্রেন-বাস-নৌকা

বর্ধমান শহরের দু’প্রান্তে দুটি বাসস্ট্যান্ড। নবাবহাট ও উল্লাস। দুটি বাসস্ট্যান্ডেই স্থানীয় ও দূরপাল্লার বাস মজুত ছিল। এলাকার বাস রোজকার মতো চললেও দূরপাল্লার বাস তুলনামূলক ভাবে রাস্তায় কম নেমেছে। একই চিত্র মেমারি-গুসকরা বাসস্ট্যান্ডেও। টোটো, ট্রেকার অন্য দিনের মতোই ছিল। পরিবহণকর্মীদের দাবি, বাস চালাতে গেলে তেল, কর্মীদের দৈনিক বেতন নিয়ে গড়ে ৭০০-৮০০ টাকা খরচ রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী না থাকায় অনেকেই লোকসানের আশঙ্কায় বাস নামাননি। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। বর্ধমান-হাওড়া লাইনের শক্তিগড়ে বিজেপি সমর্থকৱা অবরোধ করায় ১০ মিনিট মতো ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। রেল পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।

Advertisement

কালনা থেকে ৯টি রুটে প্রতিদিন ৬০টি বেসকারি বাস চলে। এ দিন বাস কিছুটা কম ছিল। পান্ডুয়া-বৈচি, কালনা-পান্ডুয়া, কালনা-নবদ্বীপ রুটের অনেকে দেরিতে বাস পেয়েছেন। বাস চালকদের দাবি, বাস নামালেও পথেঘাটে প্রত্যাশিত যাত্রী মেলেনি। খেয়াঘাটের ছবি অবশ্য স্বাভাবিকই ছিল।

কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ১৫টা বাস কম চলেছে। বাস মালিক ইউনিয়নের সভাপতি নারায়ণচন্দ্র সেন জানান, আসানসোল, বেনাচিতি, বোলপুর, কৃষ্ণনগরের বাস চলেনি। তবে মেমারি বা বর্ধমান রুটের সব বাসই চলেছে।

স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়

বনধে্‌র জন্য পরীক্ষা স্থগিত বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরেই অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, বুধবার কোনও পরীক্ষা স্থগিত হচ্ছে না। সেই মতো এ দিন সকাল ৯টার মধ্যে দূরশিক্ষা বিভাগের স্নাতকোত্তর স্তরের বাংলা বিভাগের পরীক্ষার্থীরা গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে হাজির হয়ে যান। বিক্ষোভও দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, দু’দিন আগে পরীক্ষা বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তারপরে মঙ্গলবার রাতে টিভিতে জানতে পারছেন, পরের দিন পরীক্ষা স্থগিত থাকছে না। বিভ্রান্তির জেরে শিলিগুড়ি, কোচবিহারের মতো জায়গা থেকে পরীক্ষার্থীরা আসচে পারেননি বলেও তাঁদের দাবি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। মাত্র ১৮ জন আসতে পারেননি। না আসার কারণ খতিয়ে দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলার প্রায় সমস্ত সরকারি, বেসরকারি স্কুল খোলা ছিল। তবে পরীক্ষার্থী কম ছিল অন্যদিনের তুলনায়। পূর্বস্থলীর কুবাজপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় কম ছাত্র আসার কারণে খোলার কিছুক্ষণ পরে ছুটি দিয়ে দেয়।

ভান্ডারটিকুরিতে রেল অবরোধ। বুধবার। ছবি: উদিত সিংহ ও জাভেদ আরফিন মণ্ডল

দোকান-বাজার-অফিস

বর্ধমান শহর তো বটেই গ্রামীণ এলাকাতেও দোকানপাট খোলা ছিল। সকাল থেকে দোকান খুলে রাখার জন্য তৃণমূলের মিছিল হয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। মেমারির পারিজাতনগরে মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী। তারপরেও বেশির ভাগ দোকান বন্ধ ছিল সেখানে। সরকারি দফতর, ডাকঘর খোলা ছিল সর্বত্রই। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, ৯৯.৫ শতাংশেরও বেশি সরকারি কর্মী হাজিরা ছিলেন। সব দফতরেই স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। কালনার ব্যবসায়ীরা অবশ্য ছুটির মেজাজে ছিলেন। চকবাজার ছিল সুনসান। আনাজ, মাছের আড়ত, মুদিখানা, চাউল পট্টি কিছুই খোলেনি। কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর জামাকাপড়ের দোকান অবশ্য খোলা ছিল। কয়েকজন মুহুরি ও বিচারপ্রার্থী ছাড়া বেশির ভাগ আইনজীবীদের দেখা যায়নি কালনা আদালতে। কাটোয়ার নিচুবাজারের আনাজ বাজার বন্ধ ছিল। স্টেশন বাজার ও মাধবীতলায় বেশির ভাগ দোকান বন্ধ থাকলেও কাছাড়ি রোডের বেশ কিছু দোকান খোলা ছিল।

তাঁতশিল্প

পুজোর আগে ব্যস্ততার মরসুম হলেও ধাত্রীগ্রামের তাঁত এলাকার বেশির ভাগ দোকান বন্ধ ছিল। সুতো, রং-সহ নানা সামগ্রী কিনতে দেখা যায়নি ক্রেতাদেরও। সমুদ্রগড়, শ্রীরামপুরে অবশ্য বন্‌ধের তেমন প্রভাব পড়েনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন