বর্ধমান পুরসভা।—ফাইল চিত্র।
আয় বাড়াতে প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্পত্তি-কর আদায়ের লক্ষ্যে টানা পাঁচ দিন শিবির করেছিল বর্ধমান পুরসভা। আশা ছিল, শিবিরে ভিড় উপচে পড়বে। পুরসভার ঘরে আসবে বকেয়া টাকার অনেকটাই। কিন্তু শেষমেশ এই শিবির থেকে সম্পত্তি-কর বাবদ পুরসভার ঘরে এসেছে মাত্র ১১ লক্ষ ৭৯ হাজার ২৩১ টাকা।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, গত বছর সম্পত্তি কর পুনর্মূল্যায়ণ হয়েছে। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছর থেকে নতুন কর চালু হয়েছে। প্রায় ৫৫ হাজার সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত ভবন থেকে পুরসভার আয় হওয়ার কথা ১৪ কোটি টাকা। সেখানে জানুয়ারি পর্যন্ত আদায় হয়েছে তিন কোটি। পুরসভার খরচ সামলাতে আয় বাড়ানোর দিকে নজর দেন কর্তৃপক্ষ। সে জন্য প্রথমেই সম্পত্তিকর আদায়ের জন্য ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে শিবির করার কথা ভাবা হয়। ৮-১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিবির চলে। সেই শিবির থেকে ওই পরিমাণ টাকা আদায় হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানকার এক কর্তার কথায়, ‘‘চলতি আর্থিক বছরের শেষ তিন মাসে পুরসভা বিভিন্ন খাত থেকে ৬ কোটি টাকা আয় করা হবে বলে পরিকল্পনা করেছিল। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ছিল সম্পত্তি-কর। সেখানেই ধাক্কা খেতে হল!’’
গত বছর পুরনো কর বাবদই পুরসভার ঘরে ঢুকেছিল প্রায় ৫ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। নতুন ব্যবস্থায় প্রতিটি ভবনেরই সম্পত্তি-কর বেড়েছে। তার পরেও গত আর্থিক বছরের সম্পত্তি-কর ছোঁয়া যাবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। পুরসভার সচিব জয়রঞ্জন সেন অবশ্য বলেন, ‘‘পুনর্মূল্যায়ণের বছরে সম্পত্তি কর দিতে টালবাহানা থাকে বাসিন্দাদের মধ্যে। এ বারও সেই ঘটনা ঘটছে।’’ তিনি আরও জানান, শিবির নিয়ে প্রচারের ঘাটতির জন্য অনেকে ঠিকমতো জানতেও পারেননি। সে কারণেই শিবিরমুখো হননি।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ব্যাক্তিগত ও বেসরকারি সংস্থা ছাড়াও সরকারি ভবন থেকে পুরসভা সম্পত্তি-কর বাবদ পাবে প্রায় ৪ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের বকেয়া রয়েছে প্রায় এক কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা। ওই কলেজের হাসপাতালের কাছেই পুরসভা পাবে প্রায় এক কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার (বিডিএ) বকেয়া রয়েছে ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা।
ওই শিবিরের ক’দিন পুরসভায় কর বাবদ জমা পড়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। পুরসভার নির্বাহী বাস্তুকার অমিতকুমার গুহ বলেন, ‘‘সরাসরি পুরসভার ঘরে যে টাকা জমা পড়ে, তার চেয়ে সাড়ে চার গুণ বেশি টাকা শিবিরে আদায় হয়েছে। এই শিবির করে পুরসভা সফল।’’